ডেস্ক রিপোর্ট
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান টেস্টে বল টেম্পারিং-এ অভিযোগে নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার পদত্যাগ করেছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া রোববার এ খবর নিশ্চিত করেছে।
গতকাল কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিন বল টেম্পারিং-এর ঘটনা ঘটান অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ক্যামেরন বেনক্রফট। ফিল্ডিং করার সময় বল হাতে পেয়ে পকেটে হাত দেন তিনি। সেখান থেকে হলুদ রঙের একটি কাগজজাতীয় বস্তু বের করে বলের আকার পরিবর্তন করার চেষ্টা চালান। তার এই কান্ড ধরে পড়ে যায় ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন পাশে থাকা প্রায় ২০-২৫টি ক্যামেরায়। সেটি পড়ে স্টেডিয়ামের ভেতরের টিভি স্ক্রিনে দেখানো হয়। তাতে অবাক হয়ে বেনক্রফটের সাথে কথা বলেন ম্যাচের দুই অন-ফিল্ড আম্পায়ার। কিন্তু আম্পায়ারদের অভিযোগ অস্বীকার করেন বেনক্রফট।
পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হওয়াতে পকেটে থাকা কাগজজাতীয় বস্তুটি নিজের ট্রাউজারে ডুকিয়ে ফেলেন বেনক্রফট। সেটিও ক্যামেরায় ধরে পড়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে দিনের খেলা শেষ হবার পর নিজের কু-কীর্তি স্বীকার করতে বাধ্য হন বেনক্রফট।
সংবাদ সম্মেলনে বেনক্রফটের পাশে থাকা অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বল টেম্পারিং-এ দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কোচ বাদে দলের সকল খেলোয়াড়দেরই আগ্রহ ছিলো। টেস্ট জিততে মরিয়া থাকায় বাধ্য হয়েই এমন কাজ করেছে তার দল। তবে ভবিষ্যতে এমন কু-কীর্তি আর হবে না।’
ভবিষ্যত খুব বেশি দূর যেতে পারেনি। কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর আগেই নেতৃত্বই ছেড়ে দিতে হলো স্মিথকে। শুধুমাত্র অধিনায়কই নন, নিজের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সড়ে যেতে হলো ওয়ার্নারকেও।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড জানান, ‘স্মিথ ও ওয়ার্নারের সাথে আলোচনা পর এই টেস্টের বাকি সময়ের জন্য অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের নিজ নিজ পদ ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে তারা।’
একটি টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন বল টেম্পারিং-এর দায়ে অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের সড়ে যাবার ঘটনা ক্রিকেটে হয়তো এবারই প্রথম। পাশাপাশি এটি বিরল ঘটনা হয়েই থাকবে ক্রিকেট বিশ্বে। দল পরিচালনার জন্য দায়িত্ব হারালেও দলের সাথেই থাকবেন স্মিথ ও ওয়ার্নার। এদিকে, ম্যাচ রেফারি বল টেম্পারিং ঘটনার জন্য স্মিথকে এক ম্যাচের জন্য নিষিধ্য করেছে।
টেস্টের চতুর্থ দিন থেকে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বের দায়িত্ব পেলেন উইকেটরক্ষক টিম পাইন। হয়তো সিরিজের বাকী ম্যাচগুলোতেও দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে পাইনকে। তবে এটি নিশ্চিত এই সিরিজে তো নয়ই, ভবিষ্যতে আর কখনো স্মিথের অধিনায়কত্ব পাওয়া নিয়ে সংশয় থাকবে।