কোটা সংস্কারের দাবিতে ফের অন্দোলনে ছাত্র অধিকার পরিষদ

1251
31

ডেস্ক রিপোর্ট

সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আবারও রাস্তায় ফিরে গেলেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে আবারও মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

তারা বলছেন, ‘ছাত্রসমাজের’ দাবি এবং কোটা বিষয়ে কৃষি ও অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে তারা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। সেই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, সড়ক অবরোধসহ সব ধরনের বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. রাশেদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এসময় সেখানে যোগ দেন সোমবার সন্ধ্যা থেকে টিএসসির সামনে অবস্থান নিয়ে আলাদাভাবে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরাও।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভসংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান বলেন, ‘গতকাল সোমবার আমরা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে। কিন্তু একই সময়ে জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদেরসহ ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা এ বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য দেননি।

এছাড়া অর্থমন্ত্রী আজ ঘোষণা দিয়েছেন আগামী বাজেটের আগে কোটা সংস্কার করা হবে না। সংস্কার নিয়ে তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, খুব দ্রুত কোটা সংস্কারে তাদের কোনও চিন্তা ভাবনা নেই। এ কারণে আমরা আবার আমাদের নিয়মিত কর্মসূচিতে ফিরে যাচ্ছি।’ তিনি এ সময় সারাদেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবরোধের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

সোমবার সংসদ অধিবেশনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছিলেন, ‘পরিষ্কার বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে। রাজাকারের বাচ্চাদের আমরা দেখে নেবো। তবে ছাত্রদের প্রতি আমাদের কোনও রাগ নেই। মতলববাজ, জামায়াত-শিবির, তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে সামান্য শৈথিল্য দেখানো হবে না।’

রাশেদ খান আরও বলেন, ‘কত শতাংশ কোটা রাখা হবে তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুর্দিনিষ্টভাবে ঘোষণা এলেই কেবল আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। একইসঙ্গে খুব দ্রুত কোটা সংস্কারের ঘোষণাও আসতে হবে।’ তিনি অভিযোগ করেন, আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রশাসন গতকাল আশ্বাস দিলেও কেউ এখনও যোগাযোগ করেনি। গ্রেফতারদেরও এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি।

সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে আন্দোলনরতদের সঙ্গে রোববার সারা রাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলে। এরপর সোমবার বিকালে সচিবালয়ে সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে ৭ মের মধ্যে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সিদ্ধাস্ত আসে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদ ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থানে থাকা আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।