নিউজ ডেস্ক/এমএসএ
আট বছর বয়সী এক মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ভারতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আসিফা বানো ১০ জানুয়ারি জম্মু কাশ্মীরের শহর কথুয়ার একটি তৃণভূমিতে ঘোড়া চরাতে গিয়ে হারিয়ে যায়। এক সপ্তাহ পর তার বিকৃত দেহটি এলাকার একটি জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া যায়। ভারতীয় পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় আট বছরের শিশু আসিফাকে।
বুধবার (১১ এপ্রিল) জম্মু ও কাশ্মিরের রাজ্য পুলিশ আসিফা হত্যাকাণ্ডে দায়েরকৃত অভিযোগগুলির বিবরণ প্রকাশ করে। এখানে উল্লেখ করা হয়, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংঘাতের ফলে এই ভয়ানক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
আসিফা ছিল বকরওয়াল গোষ্ঠীর একটি নিষ্পাপ শিশু। বকরোয়াল সম্প্রদায় হল ভ্রাম্যমাণ সুন্নি মুসলিম গোষ্ঠী যারা অঞ্চলটির হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। এটাই ছিল বানোর একমাত্র পাপ!
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে, পুলিশ চার্জশিট অনুযায়ী, বর্বর ধর্ষকেরা শিশু আসিফার পরিবারকে কথুয়া থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তার অপহরণ করে। তাকে একটি হিন্দুদের মন্দিরের কাছে নিয়ে গিয়ে তাকে ড্রাগ প্রদান করে, অত্যাচার করে, গণধর্ষণ করে। ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঝুঁকে পড়ে শিশু বানো।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, আসিফার ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আটজনের আধৃত চারজনই পুলিশ কর্মকর্তা। অন্যান্য সন্দেহভাজনদের একজন হল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। অভিযুক্তরা সবাই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।
হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের বিসর্জন হল ছোট্ট আসিফা। শিশু বানোর হত্যাকাণ্ডে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের সচেতন নাগরিকসহ বিশ্ববাসী। অন্যদিকে, আসিফার হত্যাকাণ্ডে আটকের আপত্তি জানিয়েছে হিন্দু ইউনিটি প্লাটফর্ম। ধর্ষণের প্রতিবাদে পুরো ভারত জেগে উঠলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘খুনি যেই হোক তার শাস্তি হবে। আমাদের কন্যারা অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবে।’
ধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্তদের আড়াল করতে যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে আইনজীবী উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে আসিফার পরিবার আসিফা হত্যা মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর আরজি করেছে।