গাজীপুর সিটি নির্বাচন: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

9
12

ডেস্ক রিপোর্ট

ঢাকার অদূরে গাজীপুর সিটিতে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে প্রচার-প্রচারণার মাত্রা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভোটের লড়াইয়ে জমজমাট হয়ে উঠছে নগরী।

বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থীকে ঘিরেই জোরালো নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে অন্তঃকোন্দলের জের ধরে গাজীপুর বিএনপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেই দলীয় প্রার্থী হাসান উদ্দিনের সাথে প্রচারণায় নামতে দেখা যায়নি।

এদিকে এই নির্বাচনকে ঘিরে মূল্যবান মতামত দিয়েছেন নগরীর একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এই নির্বাচনে জয় পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর তুলে ধরেছেন তারা।

একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে প্রায় দুই লাখ নতুন ভোটার। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে শ্রমিক, নারী, সংখ্যালঘু এবং ভাসমান ভোটার।

এবারের নির্বাচনে সার্বিক দিক বিবেচনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সরকার দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকেই এগিয়ে রাখছেন। তাদের মতে নির্বাচনের ৩ মাস আগেও বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন কিছুটা এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর ও আজমতুল্লাহর সমর্থকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করলে এবং আগের নির্বাচনে জয়ী হওয়া বিএনপির দলীয় মেয়র মান্নানের সাথে হাসান উদ্দিনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসলে পিছিয়ে পড়ে বিএনপি প্রার্থী।

তাদের মতে সরকার দলীয় মেয়র ক্ষমতায় থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই নগরবাসী উন্নয়নের স্বাদ বেশি পাবে। উদাহরণ হিসেবে তারা কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া খুলনা নির্বাচনের কথা তুলে ধরেন। খুলনা নির্বাচনে ২০১৩ সালে বিএনপির মেয়রকে জয়ী করে আশানুরূপ উন্নয়ন ও সুযোগ সুবিধা পায়নি। এর প্রধান কারণ ছিল বিএনপির মেয়রের সাথে ক্ষমতাসীন সরকারের সুসম্পর্ক না থাকা। ফলশ্রুতিতে আগের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সর্বশেষ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে ব্যালট বিপ্লব ঘটান খুলনা নগরবাসী।

সেই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরবাসীও আগের নির্বাচনে তাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিবেন বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পাঁচ বছর সরকার দলীয় মেয়র ক্ষমতায় না থাকায় গাজীপুরে আশানুরূপ কোনো উন্নয়নই হয়নি। এছাড়া দুই প্রার্থী জাহাঙ্গীর ও হাসান উদ্দিনের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার দিক থেকেও এগিয়ে আছেন জাহাঙ্গীর। এছাড়া গাজীপুরের সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় মুখ আহসানউল্লাহ মাস্টারের হত্যাকাণ্ডে হাসান উদ্দিনের আপন বড় ভাই নুরুল ইসলাম সরকার জড়িত থাকার বিষয়টিও হাসান উদ্দিনকে বিপাকে ফেলেছে। উল্লেখ্য আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলা অন্যতম প্রধান আসামী হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে হাসান উদ্দিনের আপন ভাই নুরুল ইসলাম সরকার।

পাশাপাশি সারাদেশব্যাপী সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে জাহাঙ্গীরের পক্ষে জনমত বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে।

এখন দেখার অপেক্ষা আগামী ২৬ জুন গাজীপুর নির্বাচনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত কতটুকু প্রতিফলিত হয়।