ডেস্ক রিপোর্ট
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। একই সঙ্গে অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করারও সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকারকে এ সুপারিশ করা হয় বলে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। কমিটির সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খোরশেদ আরা হক ও মো. আবদুল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ঢোকার সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর। ২০১১ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর পর ঢোকার বয়সও বাড়ানোর দাবি ওঠে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। তারা যুক্তি দেখায়, সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে বেসরকারি ব্যাংকসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের নিয়োগ দেয় না বলে বেসরকারি ক্ষেত্রেও চাকরির সুযোগ সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়, চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
কিন্তু সংসদীয় কমিটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার পাশাপাশি অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার ব্যবস্থা করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে।
কমিটি সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে বেশকিছু যুক্তিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো তাদের জনগণকে মানবসম্পদে রূপান্তরের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমারেখা নির্দিষ্ট করেনি। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ ওই সব দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে সাধারণ ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনেও বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। আর সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরাও ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বৈঠকে আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়মের সুযোগ থাকায় এ পদ্ধতি বাতিল করে স্থানীয়ভাবে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ ও নিবন্ধনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে উপজেলার আকার, ইউনিয়ন সংখ্যা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবং স্কুল কলেজ সরকারিকরণে বাস্তব অবস্থা বিবেচনার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের পুরাতন গাড়ি বদলে নতুন গাড়ি ও এসিল্যান্ডদের নতুন গাড়ি দেয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার তাগিদ দেয়া হয়।