স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের চাঁচুড়ীর বাজারের দোকানপাট বন্ধ রেখে ইনছান মোল্যা (২৭) হত্যার বিচার দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার (২৭ জুন) সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি বাজারের ব্যবসায়ীরা ইনছান হত্যার বিচারের দাবিতে দোকানপাট বন্ধ রাখেন। কালিয়ার চাঁচুড়ি বাজারে ইনছানের একটি মোবাইল শোরুম রয়েছে।
জানা যায়, গত ২৫ জুন সোমবার দুপুরে খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ের হোটেল আজমল প্লাজা থেকে ইনছানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ইনছান নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি গ্রামের ইঞ্জিল মোল্যার ছেলে। এ ঘটনায় প্রেমিকা মরিয়ম খাতুনকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। কালিয়ার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া গ্রাম থেকে গত সোমবার সন্ধ্যায় (২৫ জুন) ইনছানের প্রেমিকা মরিয়মকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত ইনছানের ভাই চাঁচুড়ি ইউপি সদস্য তৌরুত মোল্যা জানান, গত ২১ জুন সকাল ৮টার দিকে তার ভাই চাঁচুড়ি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুজির পর ইনছানের সন্ধান না পাওয়ায় পরেরদিন (শুক্রবার) রাত ১০ টার দিকে কালিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তিনি আরো জানান, গত ২৫ জুন বিকেলে খুলনায় একটি হোটেলে গিয়ে ছোট ভাই ইনছানের লাশ সনাক্ত করেন। এদিকে, জানাজা শেষে ইনছানকে মঙ্গলবার (২৬ জুন) বিকেলে চাঁচুড়ি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ জুন (শনিবার) এক যুবক ও যুবতী খুলনার পিকচার প্যালেস মোড়ের হোটেল আজমল প্লাজার পঞ্চম তলার ৫০২ নম্বর কক্ষে উঠেন। তবে হোটেল রেজিস্টারে তাদের কোনো নাম, ঠিকানাসহ কোনো তথ্য লিপিবদ্ধ ছিল না। এরই মধ্যে গত সোমবার দুপুরে পুলিশ ওই কক্ষের দরজা ভেঙে ওই যুবকের (ইনছান) লাশ উদ্ধার করে। নিহত ইনছানের দুই হাত ও পা বাঁধা এবং মুখ ও পুরুষাঙ্গ আগুনে ঝলসানো ছিল। এদিকে তার সাথে হোটেলে ওঠা যুবতীকে ওই সময়ে ওখানে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে হোটেলে নিহত অজ্ঞাত ওই যুবকের নাম ইনছান মোল্যা। বাড়ি নড়াইলের চাঁচুড়ি গ্রামে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার লাঙ্গুলিয়া গ্রামের কালাম বিশ্বাসের মেয়ে মরিয়ম খাতুন সঙ্গে ইনছানের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবরে ভারতে গিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু কালিয়ায় ফিরে এসে ইনছান মরিয়মকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ইনছান অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর ১১ ডিসেম্বর (২০১৭) ইনছান মোল্যাকে আসামী করে কালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন মরিয়ম। এ মামলায় কারাভোগের পর ইনছান বর্তমানে জামিনে ছিলেন। কালিয়া থানার ওসি শেখ শমসের আলী জানান, তৌরুত মোল্যা বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মরিয়মের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মরিয়মকে গ্রেফতারের পর খুলনায় হস্তান্তর করা হয়েছে।