কান্নার শব্দ কোথাও পৌছায়নি, স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁচার চেষ্টা!

10
12

নিজস্ব প্রতিবেদক

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শাহজাদপুরের যমুনা নদীতে ব্যাপক হারে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে হুমকির মধ্যে রয়েছে যমুনা তীর রক্ষা বাঁধ। এরই মধ্যে বাঁধের ৪০০ ফুট এলাকা ধসে গেছে।

এলাকাবাসী বাড়িঘর ও ভিটেমাটি রক্ষায় চাঁদা তুলে বাঁশ-বস্তা কিনে যমুনার তীর রক্ষা বাঁধের ধস ঠেকানোর চেষ্টা করছেন কৈজুরী ইউনিয়নের ভাটপাড়া ও গুধিবাড়ী গ্রাসের মানুষ।

এলাকার ভুক্তভোগী তাপস নন্দী, মোক্তার হোসেনসহ অনেকে জানান, গত বছর বন্যার সময় যমুনা তীর রক্ষা বাঁধসহ এ গ্রামের অনেকখানি ভেঙে যায়। এক বছর পেরিয়ে গেলেও ওই ভাঙা অংশে কোনো সংস্কার হয়নি। ভাঙনের পর অনেক রাজনৈতিক নেতা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এসে দেখে ভাঙন প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কার্যকর হয়নি। এবারও পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। তাই কারও তোয়াক্কা না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা তুলে বাঁশ, বস্তা, তালাই কিনে যমুনার কবল থেকে বাড়িঘর ও ভিটেমাটি বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

১০০ বছরের টেকসই যমুনা তীর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ধসে যাওয়ায় যমুনা নদীতীরবর্তী ১৩ গ্রামের মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দীর্ঘস্থায়িত্বের ওই বাঁঁধ নির্মাণের আট বছরের মধ্যে তিন-চার স্থানে জিও টেক্সটাইল সরে গিয়ে সিসি ব্লকের নিচের মাটি সরে গেছে। এতে ভাঙনের কবলে পড়ে ধসের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ-দুর্দশা।

ধসজনিত কারণে হুমকির সম্মুখীন ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই বাঁধটি। স্থানীয় ইউপি সদস্য শুকুর আলী বলেন, আমি ভাঙনের বিষয়ে চেয়ারম্যানকে বলেছি, তিনি বলেন, কাজ অনেক আগেই পাস হয়েছে। ঠিকাদারের সমস্যার কারণে কাজ দেরি হচ্ছে। অথচ এবার আবার নদী ভাঙতে শুরু করেছে। তাই এলাকার মানুষ নিজেরাই টাকা তুলে শ্রম দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের যমুনা তীর রক্ষা বাঁধের ভাঙন সংস্কারের জন্য বারবার পাউবোকে অনুরোধ করেছি। তারা বলেন, এ বিষয়ে কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ এলে এ কাজ করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা পাউবোর প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী থেকে বিনোটিয়া পর্যন্ত নির্মিত যমুনা নদীর ১০ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ বাঁধের অনেক স্থানে গত বন্যায় ধসে গেছে। আমরা এই যমুনা তীর রক্ষা বাঁধ সংস্করণের জন্য তিনবার টেন্ডার দিয়েছি। কিন্তু কোনো ঠিকাদার এ কাজ করার জন্য এগিয়ে আসেননি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। অনুমতি পেলে কাজ শুরু করব।