ডেস্ক রিপোর্ট
প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর পক্ষ থেকে ভোটে নানা অনিয়মের অভিযোগ, বিলম্বে ফলাফল প্রদান, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব আসনের ফলাফল দিতে না পরার মধ্যেই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে জয়ের দাবি করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ডন ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের পার্লামেন্টের ২৭০টি আসনের মধ্যে ১৯৪টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
ফলাফলে ইমরানের দল ৯৮টি আসন পেয়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৪৯টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া প্রয়াত বেনজির ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ২৩টি আসন।
ই পরিপ্রেক্ষিতেই রাজধানী ইসলামাবাদে নির্বাচন পরবর্তী প্রথম ভাষণে ইমরান খান জয়ের দাবি করেন। একটি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ইমরান খানের বক্তব্য প্রচার করা হয়। ভাষণে ৬৫ বছর বয়সী ইমরান বলেন, “২২ বছর আগে আমি যে চিন্তাধারা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম তা বাস্তবায়ন করতে আল্লাহ আমাকে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।”
নির্বাচনের পুরো ফল এখনো পাওয়া না গেলেও এ পর্যন্ত গণনা হওয়া ৪৯ শতাংশ ভোটের পরিসংখ্যানে ইমরান খান যে রাজনীতির মাঠেও ‘সেঞ্চুরি’ করে ফেলেছেন তা একরকম নিশ্চিত। বিবিসি’র সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ভোটের পরিসংখ্যানে পার্লামেন্টের ২৭২টি আসনের মধ্যে ইমরান খানের দল পিটিআই ১০৫ আসন পেয়েছে। আর নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন পেয়েছে ৫৪ আসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়ালের নেতৃত্বাধীন পিপিপি পেয়েছে ৩৩ আসন।
ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, “পাকিস্তানে এ সরকারই প্রথম কোনো রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালাবে না।” একটি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ভাষণটি প্রচার করা হয়।
প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো বিশেষ করে নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন সমর্থকরা এখনো ইমরানের জয়ের ব্যাপারটি মেনে নিচ্ছেনা। ভোট গণনা এবং ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু ভোট নিয়ে এ বিতর্কের মধ্যেও অনেকেই ইমরানকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন।
পাকিস্তানের ‘দ্য ডন’ পত্রিকা জানিয়েছে, ভাষণে ইমরান খান দেশ নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়েছেন এবং সাধারণ নাগরিকদের স্বার্থ সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশে বৃহত্তর সংস্কারের পাশাপাশি জনগণের জন্য সর্বাত্মক নীতি নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ভোট নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন তাদেরকে সব অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন ইমরান। আবার ভোট নিয়ে সব অভিযোগ নাকচ করেও তিনি বলেছেন, “বুধবারের এ নির্বাচন পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু হয়েছে।”
ইমরান বলেন, “আপনারা নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে মনে করে থাকলে বা আপনাদের কোনো সন্দেহ থেকে থাকলে আমরা এর তদন্তে সহযোগিতা করব। আমরা আপনাদের পাশে থাকব। আমি মনে করি পাকিস্তানের ইতিহাসে এ নির্বাচনই সবচেয়ে সুষ্ঠু। কোনো দলের কোনো সন্দেহ থাকলে আমরা ওইসব আসনগুলোর ভোটের ফল তদন্ত করে দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেব।”