নিউজ ডেস্ক
”বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর”- কবির এই উক্তিটি শুধু কবিতায় নয়, বিশ্ব বাস্তবতায় বর্তমান। পুরো বিশ্বেই নারীরা উন্নয়নে সমান অংশীদার। কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষে রয়েছে পার্থক্য। নারীরা পিছিয়ে রয়েছে এখানে। কিন্তু উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীকে এগিয়ে নিতে হবে।
বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নারীশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আর তাই বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে গ্রহণ করেছে নানা পদক্ষেপ। শহুরে নারীদের তুলনায় গ্রামীণ নারীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। অর্থনৈতিক দৈন্যতা, সামাজিক নেতিবাচক মনোভাব, ধর্মীয় কূসংস্কার ইত্যাদি নানা কারণে গ্রামের মেয়েরা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় না বা শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়না। তাই বর্তমান সরকার গ্রামীণ নারীদের শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে নির্মাণ করেছে স্কুল ও কলেজ। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়গুলোতে তৈরী করা হয়েছে নারীবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ।
নারী শিশুদের শিক্ষামুখী করতে সরকার নারীদের জন্য উপবৃত্তি বা মাসিক টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত প্রদান করা হয় উপবৃত্তি। ফলে নারীরা এখন শিক্ষা গ্রহণে অধিক আগ্রহী। এছাড়া সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে বইও বিতরণ করছে। দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের দুপুরের খাবার দেয়া হয়। এতে গ্রামের দরিদ্র শিশুরা বিশেষ করে নারী শিশুরা অধিকহারে বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করেছে।
নারী শিক্ষার আরেকটি বড় প্রতিবন্ধকতা হলো ‘বাল্যবিবাহ’। তাই বাল্যবিবাহ বন্ধে করা হয়েছে আইন আর এ আইন অমান্যে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে সবার জন্য বাধ্যতামূলক করায় বেড়েছে শিক্ষার হার। বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। এছাড়া বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেও পাসের হার মেয়েদের বেশি।
কর্মক্ষেত্রেও বেড়েছে নারীর পদচারণা। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের কারণে। বাংলাদেশসহ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নারী শিক্ষা ও ব্যবসায়িক উদ্যোগে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ‘গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।