স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা (৮০) (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন) ইন্তেকাল করেছেন। বুধবার রাত ৭ টার দিকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি তিন মেয়ে-এক ছেলে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন।
জানাগেছে, গত ২৫ অক্টোবর নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ফজিলাতুন্নেছা। চিকিৎসার জন্য শনিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে এ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় পিলখানায় বিজিবি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এর নাতি জামাই মুন্সী আসাদ রহমান বেগম ফজিলাতুন্নেছার মৃত্যুর বিষয়টি বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি ডায়াবেটিস ও কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণের সাহসী সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নূর মোহাম্মদের জন্মস্থান মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদনগর’ করা হয়।
নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) নামে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান নূর মোহাম্মদ। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্ণেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃতুবরণ করেন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।