স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় শীতের আগাম বার্তা জানান দিয়েছে। ফলে উপজেলার সর্বত্র বৃদ্ধ ও শিশুদের মাঝে ব্যাপক হারে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। গত সাত দিনে প্রায় প্রায় সহস্রাধিক রোগী শাহজাদপুর শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় শতাধিক রোগীকে সিরাজগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত কোন রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ বছর শীতের শুরুতেই রোগীর সংখ্যা বিগত ৫ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, মৌসুম বদলজনিত কারণে শিশুরাই বেশী আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়ায়। প্রতিদিন হাসপাতাল গুলোতে শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে ভিড় জমানোর ফলে চিকিৎসক ও নার্সদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে । এ দিকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিকেও কাজ না হওয়ায় এ সব শিশু রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অভিভাবকদের ঢাকা, রাজশাহী ও বগুড়ার হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। এমন অবস্থা এখন নিত্য দিনের।
শাহজাদপুর শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ খালিদ হোসেন জানান , ঋতু পরিবর্তনের ফলে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে শাহজাদপুর উপজেলার সর্বত্র শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে শাহজাদপুরের হাসপাতাল গুলোতে হঠাৎ করেই শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। এতে হাসপাতাল গুলোতে বেড সংকুলান হচ্ছেনা। তাই বেডের অভাবে ডায়েরিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও এই একই অবস্থা বিরাজ করছে। শাহজাদপুর উপজেলা কমপ্লেক্সটি উপজেলা সদর থেকে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দুরে হওয়ায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া কষ্ট সাধ্য হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসা পেতে রোগীর স্বজনরা শাহজাদপুর সদরে অবস্থিত শিশু হাসপাতালে নিজ খরচে রোগীকে নিয়ে যাওয়ায় এখানে রোগীর চাপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেয়ে অনেক বেশি বলে জানা গেছে।
শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, নিউমোনিয়া ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ। সংক্রমণ হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক থেকে। তবে সর্দি কাশিই নিউমোনিয়া নয়। যখন জ্বরের সঙ্গে কফ ও শ্বাসকষ্ট থাকে তখনই কেবল শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ হয়, এটাই নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়া মৃদু বা হালকা থেকে জীবন হানিকরও হতে পারে। শীতে শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ এই নিউমোনিয়া।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জুবাইদা মেহের নাজ জানান, শাহজাদপুর সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এখানে সব ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও শিশু ও বৃদ্ধ রোগী নিয়ে কেউ আসতে চায়না।