নড়াইলের বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উন্মোচন

157
20

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের সরোল-বাগডাঙ্গা গ্রামে বয়োবৃদ্ধা হাজেরা বেগম (৯০) হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়েছে। বাড়ির কাজের ছেলে আল আমিন ভূঁইয়া (২৮) হাজেরাকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। রাতে ঘুমন্ত হাজেরার ‘নাক ডাকা’র শব্দে বিরক্ত হয়ে আল আমিন তাকে (হাজেরা) হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ! গত মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম।

খুনের দায় স্বীকার করা আল আমিন ভূঁইয়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আল আমিন নড়াইল সদরের পাইকমারি গ্রামের সাঈদ ভূঁইয়ার ছেলে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, “বয়োবৃদ্ধা হাজেরা বেগমকে নৃশংস ভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা ধারণা করেছিলাম, বৃদ্ধার নাতিরা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু আল আমিনকে আটকের পর সে হাজেরাকে হত্যা করা স্বীকার করেছে। আল আমিন আমাদের (পুলিশ) জানিয়েছে, বয়োবৃদ্ধা হাজেরার ‘নাক ডাকা’র শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। পরে ছুরি পুকুরে ফেলে দেয়। আল আমিন হাজেরাদের বাড়িতে কাজ করত এবং একই ঘরে হাজেরার পাশের কক্ষে ঘুমাত। আর পরিবারের সদস্যরা অন্য ঘরে বসবাস করত।”

জানা যায়, গত ৪ জানুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে নড়াইলের লোহাগড়ার সরোল-বাগডাঙ্গা গ্রামে টিনের ঘর থেকে বৃদ্ধা হাজেরাকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত হাজেরা বাগডাঙ্গা গ্রামের আমির হোসেনের স্ত্রী। এলাকার সামাজিকতা ও বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা নিয়ে নিহত হাজেরার পরিবারের সঙ্গে পাশের গ্রামের নাতি আলিজানের বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনার জেরে নাতিরা নানি হাজেরাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে এমন ধারণা ছিল পুলিশের। এমনকি হাজেরার ছেলে আকরামও এ হত্যাকান্ডে তার ভাগ্নে আলিজানের সম্পৃক্তার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন প্রকৃত হত্যাকারীকে চিহিৃত করতে তৎপর হন। ঘটনার তিনদিন পর প্রকৃত হত্যাকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আল আমিন নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এ নির্মম খুনের বর্ণনা দেয়।

এ ব্যাপারে সচেতনমহলসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বলেন, সামান্য ‘নাক ডাকা’র শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে আল আমিন বৃদ্ধা হাজেরাকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডের যথাযথ বিচার হলে এমন ‘তুচ্ছ’ ঘটনায় মানুষ এ ধরণের নির্মম ও নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস পাবে না।