নিউজ ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে আগামীকাল শনিবার সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাঠানো আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ক্রমিক নম্বর ৩৯ (ঊনচল্লিশ)-এ এই তথ্য জানানো হয়।
ফণি’র অবস্থান সম্পর্কে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার (কিঃ মিঃ) দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এছাড়া ‘ফণি’ পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৭৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদধবন্দর থেকে ৬৫০ কিঃ মিঃ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভারতের উড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও কিছুটা দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই এলাকায় (২১.৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। ‘ফণি’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল (০৪ মে, ২০১৯) সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
বাংলাদেশ এবং এর উপকূলীয় এলাকায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিঃ মিঃ-এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১২০ কিঃ মিঃ, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির পার্শ্ববর্তী এলাকার নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সংবাদ সূত্রঃ বাসস