স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল জেলাটি তিনটি উপজেলা ও চারটি থানা নিয়ে গঠিত। ছোট এ জেলাটিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। ফলে সাধারণ ও নিরীহ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকার আধিপত্য বিস্তার,পূবশত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় গত পাঁচ মাসে ১৫টি হত্যাকাণ্ডসহ প্রায় অর্ধশতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় শতাধিক লোকও আহত হয়েছে। তবে পুলিশ এসব ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে পারলেও অধিকাংশ আসামি রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে প্রকাশ্য দিবালোকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হলেও তা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। খুনিদের গ্রেফতার ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ১১মে কালিয়ায় মানববন্ধন করেছে নিহত কটাইয়ের গ্রামবাসিরা।
জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার,পূবশত্রুতা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ১১মে সকালে কালিয়ার পারবিষ্ণুপুরে বর্র্ণি (৩২), ২৪ জানুয়ারী কালিনগর গ্রামে ভাইয়ের হাতে ফাতেমা খাতুন (২২), ২৮ এপ্রিল সকালে লোহাগড়ায় শারোল গ্রামে লিকু শেখ (৪৫), ২৭ এপ্রিল লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনের জের ধরে সৈয়দ মিজানুর রহমান (৫০), ২৬ এপ্রিল রাতে সদর উপজেলার শালিখা এলাকায় ডাবলু শেখ (৪৮), ৮ এপ্রিল নড়াগাতি থানার কলাবাড়িয়া গ্রামে আজিজুর রহমান ওরফে কটাই শেখ (৪৫), ৭ মার্চ কালিয়া উপজেলার পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামে ভাতিজার ইটের আঘাতে চাচা ও ১৮মার্চ নিখোঁজের দুইদিন পর নড়াইলে সাব্বির মোল্যা (১৪) নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। গত বছর ৬ ডিসেম্বর কালিয়ায় গুলি ও কোপে রুকু মোল্যা (৪৪) ও ইমান আলী (৩৫) খুন হয়।
এছাড়া ১৫মার্চ বিকেল ৫টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি সদর উপজেলার এক ভ্যান চালক। পরে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ মার্চ সদর উপজেলার তারাশি গ্রামে গোলাম সিকদার (৬০), একইদিনে লোহাগড়ায় অজ্ঞাত নারীর (৩০) লাশ উদ্ধার, ২৬ জানুয়ারি নড়াগাতিতে ফাতেমা আক্তার (২২) ও ৪ জানুয়ারি লোহাগড়ার সারোল গ্রামের বৃদ্ধা হাজেরা বেগমকে (৯৫) হত্যা করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন,‘স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে। পুলিশের পক্ষে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিরসন করা সম্ভব নয়। এ জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। তবে পুলিশ জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে।’