স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া গ্রামে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুবর্ণাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনার মূলহোতা ওবায়দুর রহমানকে (২২) চট্রগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৭ মে) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের ষোলো শহরের বস্তি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মনিরুল ইসলাম, লোহাগড়া থানার এসআই মিলটন কুমার দেবদাস ও আতিকুজ্জামান বখাটে ওবায়দুরকে গ্রেফতার করেন। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে ওবায়দুরের অবস্থান সনাক্ত করার পর চট্টগ্রামের ষোলো শহরের ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পেছনের বস্তি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, ঘটনার পর থেকেই ওবায়দুরকে গ্রেফতারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত ছিল। দুইদিনের মধ্যেই তাকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এর আগে ঘটনার দিন গত শনিবার দুপুরে ওবায়দুরের সহযোগী কাবুল জমাদ্দারকে (২৫) গ্রেফতার এবং হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও ভূক্তভোগী সুবর্ণার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মে শনিবার সকাল ৬টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়ার উপজেলার লাহুড়িয়ার হাজী মোফাজ্জেল স্বরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুর্বণাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে উচ্চ মাধ্যমিক ফলপ্রার্থী ওবায়দুর রহমান ও তার সহযোগী দীননাথপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী কাবুল জমাদ্দার। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় লাহুড়িয়ার গোবিন্দপাড়ায় ওই দুই বখাটে সুবর্ণার ওপর হামলা চালায়। কাবুল লাহুড়িয়ার দীননাথপাড়ার আজিজার জমাদ্দারের ছেলে এবং ওবায়দুর একই পাড়ার আজমল মোল্যার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুর্বণাকে বিদ্যালয় ও প্রাইভেট পড়তে যাওয়া-আসার পথে বখাটে ওবায়দুর প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ২৫ মে সকালে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ওবায়দুর ও কাবুল তার পথরোধ করার চেষ্টা করে আবারো প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা দু’জন সুবর্ণাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। আহত ওই ছাত্রী নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
সুবর্ণা বলে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল ওবায়দুর। আমি তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি অভিভাবকসহ অন্যদের জানালে ওবায়দুর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমনকি অ্যাসিড দিয়ে আমার মুখ নষ্ট করে দেয়ার কথা বলে।
এদিকে আহত স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।