ডেস্ক/এএস
চাইলেই রিফাতকে বাঁচানো সম্ভব ছিলো বলে মনে করেন এলাকাবাসী। বরগুনাবাসীর দাবি পুলিশ সবসময় সিসি টিভি নিয়ন্ত্রণ করলে রিফাতকে বাঁচানো সম্ভব হতো; একইসাথে আসামীদের আটক করা যেত। এদিকে রিফাত হত্যার সিসি টিভির দৃশ্যায়ন উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফুটেজ দেখে খুনীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সিসি ক্যামেরায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে এলাকাবাসী। পুলিশ সুপারের দায়িত্ব নিয়েই বরগুনার ৫৮টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসান মারুফ হোসেন। সেসময় আশ্বাস দেয়া হয়েছিল এতে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে শহর এবং অপরাধ কমে আসবে। রিফাতকে যেখানে দিনে দুপুরে হত্যা করা হয় সেই কলেজ রোডও সিসি ক্যামেরার আওতায় আছে। হত্যার ফুটেজ পুলিশ উদ্ধার করলেও রিফাতকে কোপানোর সময় ক্যামেরায় কারো নজরদারি ছিলো না।
বরগুনা মহিলা পরিষদের সহসভাপতি বেবি দাস বলেন, রিফাতকে যে ওখানে মারা হচ্ছে এ ঘটনাটা তৎক্ষণাৎ দেখলে ওকে বাঁচানো যেত। বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুলিশ যদি সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোলরুমে সার্বক্ষণিক লোক রেখে দিত, তাহলে তারা খুনিদের চিহ্নিত করতে পারত এবং যথাসময়ে ওদের আটক করতে পারত। এটা হওয়া উচিৎ ছিল। বরগুনা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, সিসি ক্যামেরার মূল উদ্দেশ্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা। সেই নিয়ন্ত্রণই যদি না হয় সেই ক্ষেত্রেতো মানুষ নেতিবাচক চিন্তাই করবে।
তবে পুলিশের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকায় আসামীরা দ্রুত ধরা পড়ছে। তবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সিসি ক্যামেরার মনিটরিং আরো জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, একসাথে এতগুলো ক্যামেরাতো দেখা যায় না। তারপরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আগামীতে এ ব্যাপারে আমাদের আরো বেশি তৎপর হতে হবে আমাদের। ক্যামেরার মাধ্যমেই কিন্তু আমরা দু’জন আসামীদের ধরেছি। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, শুধু প্রযুক্তির প্রদর্শন না করে এর প্রকৃত ব্যবহার করে অপরাধ কমিয়ে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা শহরের কলেজ রোডে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামের দুলাল শরীফের ছেলে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। আহত রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানে তার শরীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় রিফাতের।
এদিকে এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় মামলা দায়ের করা হলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ৮জনকে আটক করা হইয়েছে। যার মধ্যে তিনজন রিমান্ডে রয়েছে। আটককৃতরা হল এজহারভুক্ত আসামী চন্দন সরকার, মোঃ হাসান, মোঃ নাজমুল হাসান, তানভীর, মোঃ সাগর, কামরুল হাসান সাইমুন, অলি ও টিকটক হৃদয়। যদিও মামলার আসল আসামী নয়ন বন্ড ও রিফাত ফারাজি এখনো পলাতক। হত্যা মামলার আসামী চন্দন ও হাসান ৭ দিন এবং নাজমুল ৩ দিনের রিমান্ডে আছে।