নড়াইলের কালিয়ায় শহীদ আব্দুস সালাম কলেজে ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

9
154

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের কালিয়ায় সদ্য সরকারি হওয়া শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণীর ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কর্তৃপক্ষ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার ৭’শ টাকা থেকে ১ হাজার ৮’শ টাকা করে আদায় করছে বলে নড়াইল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগে জানা যায়, সরকারি শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজে চলতি বছর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনলাইন প্রসেসিং ফি, ভর্তি ফি, ভর্তিকরণের নামে একাদশ শ্রেণীর ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী প্রতি মানবিক ও বাণিজ্যিক বিভাগে ১ হাজার ৭’শ ও বিজ্ঞান বিভাগে ১ হাজার ৮’শ টাকা করে আদায় করছে কলেজের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকার নির্ধারিত উপজেলা পর্যায়ে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বমোট ১ হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না বলে পরিপত্র জারি করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনের স্বাক্ষরিত ২১ এপ্রিল এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার কলেজের জন্য সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ সরকারি নিয়মনীতি মানছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।

গত ১৮ জুন থেকে প্রথম ধাপে ভর্তি শেষ হয়েছে। চলছে দ্বিতীয় পর্যায়ের ভর্তির কাজ। সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭’শ থেকে ৮’শ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। গরিব, অসহায়, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না। কলেজ কর্তৃপক্ষের ধার্য টাকার স্থলে কম দিলে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছে না। সরকারি শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী আদরী খানম ও মেহেদী হাসান মানবিক শাখা এবং নাহিদ শেখ বাণিজ্য শাখা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে রসিদমূলে ১ হাজার ৭’শ টাকা নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত এ অর্থ আদায়ের এ বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে উল্লেখ না থাকায় এটি বিধিবহির্ভূত। বিধায় রোববার (৩০জুন) প্রতিকারের আশায় আমরা নড়াইল জেলা প্রশাসক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।

শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজে কলেজের কর্তৃপক্ষের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন কেউ কেউ। এছাড়া কলেজের অভ্যন্তরীণ এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি, টেষ্ট পরীক্ষা না দিয়ে পরীক্ষার ফরম পূরণে সুযোগ দেয়া,আবার অনেককে ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষায় ফরম পূরণে সুযোগ না দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ বিদ্যমান। এ নিয়ে অভিভাবক মহলে ব্যাপক ক্ষোভ বা অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক সুরেশ কুমার রায় বলেন, ‘ভর্তি সংক্রান্ত ব্যাপারে অধ্যক্ষ যে সমন্ত খাতে টাকা ধরেছেন তার বাইরে অতিরিক্ত কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না।’ এ প্রসঙ্গে কলেজের উপাধ্যক্ষ কামাল মাহমুদ অভিযোগ স্বীকার করে জানান, ‘আইনের উর্ধ্বে আমরা কেউ নই।তাই আইনের বাইরে আমরা যেতে পারিনা।কিন্তু অধ্যক্ষ নিজে দায়িত্ব নিয়ে ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। এ কর্মকান্ড বোর্ড কর্তৃক প্রেরিত সরকারী কলেজের ভর্তি প্রজ্ঞাপন বর্হিভূত। এটা আমাদের কাম্য নয়।’

কলেজের অধ্যক্ষ তপন কুমার দাশ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে মঙ্গলবার সকালে যুগান্তরকে বলেন,‘ বোর্ডের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তির টাকা নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত কোন টাকা আদায় করা হচ্ছে না।’ এ ব্যাপারে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, ‘এ বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’