স্টাফ রিপোর্টার
হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান অদম্য ও সাহসি প্রিয়াংকা অনেক বাঁধাকে উপেক্ষা করে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। প্রতিদিন সে তিন কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে এসে ক্লাস করেছে। ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলেই যে ভালো ফলাফল করা যায় প্রিয়াংকা তার প্রমাণ।
নড়াইল সদরের দূর্গাপুর গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি ও ঘরামি তাপস গাঙ্গুলির কন্যা প্রিয়াংকা। বসতভিটার ৭ শতাংশ জমি ছাড়া তাদের চাষের আর কোনো জমি নেই। চার জনের সংসারে তাপস গাঙ্গুলি অন্যের ছন বা টিনের ঘর তৈরি করে যা পান তাই দিয়ে সংসার চলে। নিজে ঘরামি হলেও বসবাসের মাত্র একটি ঘর রয়েছে। বাড়িতে নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন নেই। অন্য বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ এনে লেখাপড়ার কাজ চলে। প্রিয়াংকার মা কাঞ্চন গাঙ্গুলি বাড়ির উঠানে শাক-সবজি, হাঁস-মুরগির চাষ করে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করেন। অভারে সংসারে প্রতিদিন সে তিন কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে এসে ক্লাস করেছে।
প্রিয়াংকার বাবা তাপস গাঙ্গুলি ও তার মা কাঞ্চন গাঙ্গুলি জানান, আমরা ভাবতে পারিনি প্রিয়াংকা এতো ভালো ফলাফল করবে। যেভাবে হোক অনেক কষ্ট করে সে এইচএসসি পাশ করেছে। স্কুল ও কলেজে আমরা তার লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো বহন করতে পারিনি। এখন তার উচ্চ শিক্ষার খরচ কিভাবে বহন করবো !
প্রিয়াংকা জানান, বাইসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসায় এলাকার অনেকে এবং বন্ধু-বান্ধবিরা ভালো চোখে দেখতো না। লেখাপড়ার খরচ চালাতে নিজে কখনও কখনও টিউশনি করেছে। ইচ্ছা এবং চেষ্টার কারনেই সে ভালো ফলাফল করেছে। তার ফলাফলে শিক্ষকরা সব সময় সহোযোগিতা করেছেন। লেখাপড়ার সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়।
প্রিয়াংকার শিক্ষক প্রভাষক প্রশান্ত সরকার জানান, প্রিয়াংকা অনেক কষ্ট স্বীকার করে বাইসাইকেল চালিয়ে কলেজে ক্লাস এবং লেখাপড়া করেছে। দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে তার উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব। এজন্য তিনি সমাজের বিত্তবান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।