স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ী গ্রামে একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করে বেড়া দিয়ে ঘরের তিন পাশে ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি সাংবাদিকরা জানার পর লোহাগড়ার থানার ওসিকে অবগত করা হলেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভূক্তভোগী লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ী গ্রামের তরিকুল ইসলাম জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে নিজের বসতভিটায় বসবাস করছেন তিনি। মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। তার বসতভিটায় প্রায় ৩০ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতক নিজের কেনা জমি এবং পাঁচ শতক মায়েরপ্রাপ্ত জমি। পৈতৃকভিটা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার কামারগ্রামে বসবাস করার জন্য তরিকুল লোহাগড়ার তালবাড়িয়া গ্রামের জহিরসহ তার তিন ভাইয়ের কাছে প্রায় ৩০ শতক জমি বিক্রি করেন। ভূমি অফিসে জমির কাগজপত্র যাচাই-বাচাই শেষে গত ৩১ জুলাই ওই জমি লোহাগড়ায় রেজিস্ট্রি হয়। এছাড়া গত ৮ আগস্ট বিলের প্রায় ২১ শতক জমি তরিকুলের প্রতিবেশি শিমুল মোল্যা ক্রয় করেন। জমি বেচাকেনার এ বিষয়টি তরিকুলের মামা পাশের ঝিকড়া গ্রামের হাফিজার রহমান জানতে পেরে ক্ষুদ্ধ হন। এ ঘটনায় হাফিজার শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে হঠাৎ করে তরিকুলের ঘরের তিন পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া হাফিজার রহমান জমির ক্রেতাদের জমিতে আসতে দিবেন না বলেও হুমকি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে তরিকুল ইসলাম বলেন, মায়ের সঙ্গে প্রায় ২৫ বছর ধরে কুচিয়াবাড়ির জমিতে বসবাস করছি। আর বাবা আছেন ফরিদপুরের বাড়িতে। তিনি মাঝে-মধ্যে আমাদের খোঁজখবর নেন। এখন নিজের বাড়ি ফরিদপুরের কামারগ্রামে বসবাস করার উদ্দেশ্যে এখানকার (কুচিয়াবাড়ী) জমি বিক্রি করেছি। অথচ আমার মামা ঝিকড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান আমাদের পরিবারকে বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। ঘরের তিন পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। এ কারণে ঘরের মালামাল নিয়ে ফরিদপুরে যেতে পারছি না, যেন বন্ধীশালার মধ্যে আছি। এছাড়া জমিগ্রহীতাকেও জমিতে আসতে দিচ্ছেন না তিনি (হাফিজুর)। আমার প্রশ্ন-নিজের জমি বিক্রি করা কী অপরাধ? আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
তরিকুলের মা বলেন, আমি এবং আমার ছেলে, বেটার বউ ও দুই পুতনি (ছেলের মেয়ে) ঘর থেকে বের হতে পারছি না। বৈধ জমি বিক্রির পরও আমরা হুমকির মধ্যে আছি। অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান বলেন, পৈতৃকসূত্রে ওই জমিতে আমার অংশ রয়েছে; তাই আমি বেড়া দিয়েছি। এদিকে, বিষয়টি জানার পরও শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কোনো ভূমিকা নেয়নি বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী তরিকুলের পরিবার।