নড়াইলে যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্যঃ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন!

0
608
ফাইল ছবিঃ মৃ*তদে*হ

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের সরকেলডাঙ্গা গ্রামে কালাম কারিকর (৪০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর পর লা*শ ম’য়না তদন্ত ছাড়াই রোববার রাতে তাড়াহুড়ো করে দাফন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিহত যুবক কাদের কারিকরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন। তাকে গা’য়ে পেট্রোল ঢেলে পু*ড়িয়ে হ*ত্যার পর আত্মহ*ত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত কালামের সঙ্গে তারই সহোদর আলম ও শফি কারিকরের জমি-জমা সংক্রান্ত বি’রোধ ছিল। এছাড়া একই উপজেলার বাঁশগ্রামের জাফর মোল্যার ছেলে মিলন মোল্যার নিকট নিহত কালাম তিন লাখ পাওনা টাকা নিয়েও দ্ব’ন্দ্ব-ফ্যাসাদ ছিল। এসব কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত দশটার দিকে কে-বা কারা কালামের গা’য়ে পেট্রোল ঢেলে পু*ড়িয়ে আ*ত্মহ*ত্যার চেষ্টা করেছে বলে গ্রামে প্রচার হয়েছে। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালামের স্বজনরা তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) তার মৃত্যু ঘটে। এরপর তার লা*শ ম’য়না তদন্ত ছাড়াই রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতেই তগিগড়ি করে নিজ গ্রামে দাফন করা হয়। কালাম কারিকরের মৃত্যু রহস্য নিয়ে স্থানীয়ভাবে নানা গুঞ্জন হচ্ছে। এ মৃত্যুতে ব্যাপক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ‘গ্রামের সব শ্রেণির মানুষ বলাবলি করছে কালামকে পরিকল্পিতভাবে হ*ত্যা করা হয়েছে। লা*শ ময়না তদন্ত করলে হয়তো বিষয়টি পরিস্কার হতো। কিন্তু তারই ভাইয়েরা ময়না তদন্ত করতে দেয়নি। এসব নিয়ে গ্রামে প্রশ্ন উঠেছে তিনি নিজে আ*ত্মহ*ত্যা করতে যাবে কেন? ময়না তদন্ত ছাড়াই কালামের লা*শ দাফন করায় তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরো ঘনিভূত হয়েছে। তবে সদর থানা পুলিশ বলছে, ঢাকায় লা*শের ম’য়না তদন্ত হয়েছে।

তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানাচ্ছে, কালামকে পি*টিয়ে আ*ঘাত করার পর গা’য়ে পেট্রোল ঢেলে হ*ত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর পরে তার শরীরে আ*ঘাতেরও চিহ্ন ছিল বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেন। এ কথা জানাজানি হলে পুলিশ লা*শ ময়’না তদন্তের জন্য নিয়ে যেতে চাইলে তার ভাইয়েরা তাদের ম্যানেজ করে বলে গুঞ্জন উঠেছে। যে কারণে এই রহস্যজনক মৃত্যুর ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে।

পুলিশ আন্তরিক হলে হয়তো সুরতহাল রিপোর্টের সময় মৃত্যুর প্রাথমিক আলামত জানা সম্ভব হতো এমনটাই এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াছ হোসেন জানান, ‘এ বিষয়ে আমি কোন কিছুই অবগত নই।’

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ নিরীহ ওই যুবকের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসীর পরস্পর বিরো’ধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। এটি আত্ম*হ*ত্যা নয় বরং হ*ত্যা বলে মনে হচ্ছে এলাকাবাসীর। তবে হ*ত্যা নাকি আত্মহ*ত্যা এ রহস্যের সমাধান না হলেও যেহেতু স্বজনরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ না করে বিষয়টিকে আত্ম*হ*ত্যা বলেই চালিয়ে দিচ্ছে সেহেতু কবর থেকে লা*শ তুলে ময়না তদন্ত করার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।