নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুফু বাড়িতে ঘুরতে নড়াইলে আসতেন বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর নিকট সেই গ্রামের উন্নয়ন দাবি “শিরনামে দৈনিক ওশানে প্রতিবেদন হওয়ার পরে নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমানারা বেগম সেই কামাল প্রতাপ গ্রামের উন্নয়নের দ্বায়িত নিয়েছেন। রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী পালনের জন্য জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুুতি গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসাবে আমরা কামাল প্রতাপ গ্রামে যাওয়ার যেসব রাস্তা এবং বঙ্গবন্ধু যে মাঠে ফুটবল খেলেছেন সেই মাঠের জন্য যা যা সংস্কার করা দরকার তা করা হবে।
উল্লেখ্য গত ৭ অক্টোবর দৈনিক ওশানে নিউজ হয় যে গ্রামে বঙ্গবন্ধু বেড়াতে আসতেন বঙ্গবন্ধুর ফুফু বাড়ি নড়াইলের কামাল প্রতাপ গ্রামে উন্নয়নে ছোয়া লাগেনি এবং সংস্কার ও হয়নি বঙ্গবন্ধুর ফুটবল খেলার মাঠ।১৯২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমানের আপন মামাতো বোন) মামাতো ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার কামাল প্রতাপ গ্রামের কাজী আবুল হায়াত এর সাথে বিবাহ হয়। শেখ হায়াতুন্নেছা গোপালগঅঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ আব্দুল হকের কনিষ্ঠা কন্যা। তিনি নিজের ইচ্ছায় শেষ বয়সে ছোট মেয়ে বাগেরহাটের পৌরসভা এলাকার নূরজাহান বেগম রানীর বাসায় ছিলেন। নূরজাহান বেগম রানীর মেয়ে ফরিদা আক্তার বানু লুসির স্বামী অধ্যাপক মীর সাখাওয়াত আলী দারু বাগেরহাট-২ আসনে ৩ বার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাগেরহাটে রাজনৈতিক সফরকালে অসুস্থ্য শেখ হায়াতুন্নেছাকে দেখতে গিয়েছিলেন। শেখ হায়াতুন্নেছা ২০০১ সালের ৪ঠা জানুয়ারী মৃত্যূবরণ করলে বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজারের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুফু বাড়ি নড়াইলের কামাল প্রতাপ গ্রামে আসা যাওয়া ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় সেই কামাল প্রতাপ গ্রামে যাওয়ার জন্য তিন দিকের রাস্তাই এখনো কাচা এবং কিছু অংশ ইটের সলিং যার অবস্থা ও বেহাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার ছোট দৌহিত্র কাজী হাফিজুল করিম শিল্পী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের গ্রামবাসীর দাবি যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই গ্রামে এসেছিলেন এবং স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছিলেন সেহেতু খেলার মাঠটি খেলার উপযোগি করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরন করে স্টেডিয়াম করা হোক। এবং খেলার মাঠ ও গ্রামে আসার রাস্তাগুলি পাকাকরণ করা হোক।
এ ব্যাপারে কামাল প্রতাপ গ্রামের বৃদ্ধ মূন্সি হাদিউজ্জামান বলেন, ১৯৫১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সাথে কামাল প্রতাপ স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩/৪ বার আমাদের কামাল প্রতাপ গ্রামে এসেছেন। তবে একবার এসে এক নাগাড়ে ৪দিন ছিলেন। বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ফুফু বাড়ি আমাদের গ্রামে হওয়ায় মাঝে মাঝে বেড়াতে আসতেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার পাশের বাড়ির বৃদ্ধা মোছাঃ লতিফা আক্তার জানান, আমার শশুর বঙ্গবন্ধুর ফুফু হায়াতুন্নেছাকে বিয়ে দিয়ে এনেছিলেন এই গ্রামে। তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি আরো জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ হায়াতুন্নেছার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। কামাল প্রতাপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিত বাবু বলেন, বঙ্গবন্ধু এই স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছেন অথচ বর্তমানে খেলার মাঠটি খানা খন্দে খেলার অনুপযোগী। আমরা চাই যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই মাঠে ফুটবল খেলেছেন সেহেতু মাঠটি সংস্কার করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা হোক।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই শেখ বোরহান উদ্দিনের নিকট গেলে তিনি বলেন, নড়াইলের কামাল প্রতাপ বঙ্গবন্ধু ও আমাদের ফুফু বাড়ি এবং বঙ্গবন্ধু কামাল প্রতাপ গেছেন এটা সত্য।
শেখ বোরহান উদ্দিনের সাথে কথা বলে আরো জানা যায় কামাল প্রতাপ গ্রামের বঙ্গবন্ধুর ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার ছেলে কাজী নূরূল ঈমান (সইয়ুব) ও কাজী নুরুজ্জামান (আইয়ুব) এর সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। যে কারণে যখন বঙ্গবন্ধুর বিরু*দ্ধে আগরতলা ষ*ড়যন্ত্র মামলাসহ যে কোন রাজনৈতিক ষ*ড়যন্ত্রের খবর কাজী নুরুজ্জামান আইয়ুব সন্ধার পরে স্কুটার করে এসে রেনু বুজির কাছে বলে যেতেন। তথন কাজী নুরুজ্জামান আইয়ুব ডিএসবি দারোগা ছিলেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় মারা যান। কাজী নূরূল ঈমান (সইয়ুব) কামাল প্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসর নিয়ে ২০১৩ সালে মারা যান।বর্তমান প্রধান মন্ত্রী তখন আইয়ুব কাকা সইয়ুব কাকা বলে ডাকতেন চিনতেন।