শিশু তুহিন হ*ত্যায় পরিবারের সম্পৃক্ততা!

0
28

ডেস্ক/এসএস

মধ্যযুগীয় ব*র্বরতাকেও যেন হার মানিয়েছে আধুনিক যুগের এই মানুষরূপী পশুর আচরণ। হয়তো পশু বললেও সৃষ্টির অন্যান্য প্রাণীদের অসম্মান করা হবে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে শিশু নি*র্যাতন করে কিছু বিকৃত রুচির পরিচয়ধারীদের আনন্দোচ্ছ্বাসে শিউরে উঠেছে অনেকেই। কিন্তু এবারের ঘটনা এতোটাই ভয়া*বহ যে দুর্বল হৃদয়ের মানুষ নি*র্যাতিত শিশুটির লা*শের চিত্র দেখে হয়তো আর সুস্থ থাকতে পারবেন না।

মসজিদের পাশেই সড়ক। সেই সড়কের পাশে এক কদম গাছের ডালে ঝু*লছে মাত্র পাঁচ বছরের শিশু তুহিনের ম*রদেহ। তার পে*টের মধ্যে ঢু*কানো আছে দুটি ছু*রি। কাঠের হাতলগুলো বের হয়ে আছে তার পে*টের উপর। শুকনো গ*লার সঙ্গে থাকা রশি দিয়ে গাছের ডালে ঝু*লানো। আর ডান হাতটা সেই রশিতে গ*লার সাথেই পেঁচানো। বাম হাতটি ঝু*লে আছে। কে*টে নেয়া হয়েছে শিশুটির কান ও পুরু*ষাঙ্গ। আর পুরো শরীর ভিজে আছে র*ক্তে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে আছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাজার হাজার মানুষসহ দেশবাসী।

ঘটনার নি*ষ্ঠুরতায় থমকে যায় এলাকাবাসী। মা মনিরা বেগম, কৃষক বাবা আব্দুল বাছিরের আ*র্তনাদ আর আহাজারিতে যেন ভারি হয়ে যায় পরিবেশ। স্থানীয়দের অনেকেই জানায় যে জমিজমা নিয়ে গ্রামের কিছু মানুষের সঙ্গে তুহিনের বাবার বি*রোধ রয়েছে। এ কারণেই তুহিনকে হ*ত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাদের সবার দাবি একটাই এমন হ*ত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ক*ঠোর শা*স্তি দেয়া হোক।

স্থানীয়রা আরো জানায়, নিহ*ত তুহিনের বয়স পাঁচ বছর। তাকে এ বছরই স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। আব্দুল বাছিরের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তুহিন ছিল দ্বিতীয়। রোববার রাতে তারা খাওয়া-দাওয়া শেষে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্য রাতে ঘরের দরজা খোলা দেখে বাছিরকে ডেকে তুলেন তার এক ভাতিজি। জেগে উঠে দেখেন তুহিন পাশে নেই। এরপর সবাইকে ডাকাডাকি করে তুহিনকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশে গিয়ে র*ক্ত দেখে সামনে এগিয়ে কদমগাছে তুহিনের ঝু*লন্ত ম*রদেহ দেখতে পান।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার বিকালে মোট সাতজনকে আটক করে পুলিশ থানায় নেয়। তাদের মধ্যে আসেন তুহিনের বাবা আব্দুল বাসির, চাচা আব্দুল মসব্বির, নাসির উদ্দিন, চাচি খায়রুল নেছা, চাচাত বোন তানিয়া ও প্রতিবেশী আজিজুল ইসলাম ।

এরপর এই নি*র্দয় ঘটনার বিবৃতি জানাতে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা তুহিনের পরিবারের সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছিলাম। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ২/৩ জনের সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। যে ২/৩ জন হ*ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছে।”

হ*ত্যার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রতিহিং*সাবশত হতে পারে, পূর্ব শ*ত্রুতার জের ধরে প্রতিপ*ক্ষকে ফাঁ*সাতে হতে পারে, আবার মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে এ হ*ত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে; তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলা যাচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, নিহ*তের বাবাসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য বিভিন্ন মামলার আসামি। এলাকায় তাদের একাধিক প্র*তিপক্ষ রয়েছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘা*য়েল করতে চায়।” কিন্তু কে বা কারা হ*ত্যাকাণ্ডে জড়িত তা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন, “এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, সবাইকে আটক দেখানো হচ্ছে না। পুরোপুরি জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে হ*ত্যা মামলা দায়ের করা হবে।”

এরমধ্যে নিহ*ত তুহিনের পে*টে বিদ্ধ দুটি ছু*রির হাতলে দুইজনের নাম খোদাই করা অবস্থায় পাওয়া যায়। ছু*রি দুটিতে ওই গ্রামের বাসিন্দা ছালাতুল ও সোলেমানের নাম লেখা রয়েছে। তবে তাদের ফাঁ*সাতে এ ধরনের হ*ত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।

দুঃখজনক ও নি*র্মম এই ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হলে হ*ত্যাকারীদের বর্বরতার দৃষ্টান্ত দেখে নিন্দা ও ধিক্কার জানায় অনেকে। সকলের একটাই প্রত্যাশা খুব দ্রুত এই ব*র্বরতার যেন উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শা*স্তির ব্যবস্থা করা হয়।