নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ বছর পর আগামীকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) নড়াইলের নড়াগাতি থানা আ’লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কাউন্সিলররা উৎসব মুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন চান। এদিকে থানা এবং থানার ছয়টি ইউনিয়ন থেকে দু’টি করে কাউন্সিলরের নামের তালিকা জেলা আ’ লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে জমা পড়েছে। এমতাবস্থায় অস্থি’তিশীল পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভাবনা হতে পারে বলে কিছু কাউন্সিলর মনে করছেন। দ্ব’ন্দ্ব-সং’ঘাত নিরসনে মনোনয়নের মাধ্যমেও নেতা নির্বাচনের তৎপরতা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল। সম্মেলনে মোঃ মফিজুল হককে সভাপতি এবং খান শামীমুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট থানা কামিটি গঠন করা হয়। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মান্নান।
২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সাধারণ সম্পাদক খান শামীমুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় কেন্দ্র থেকে খান শামীমুর রহমানকে বহি’স্কার করা হয়। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাজা নাজিম উদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে থানা কমিটির এক বর্ধিত সভায় নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হকের উপস্থিতিতে থানার ছয়টি ইউনিয়ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওই বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন থানা কমিটির সভাপতি মোঃ মফিজুল হক। মে মাসে ছয়টি ইউনিয়নে আহবায়ক কমিটি এবং ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ছয়টি ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। তখন থেকেই আগের এবং ঘোষিত কমিটির মধ্যে দ্ব’ন্দ্ব চলে আসছে।
নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগ কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগের নেতৃত্বে আছেন বর্তমান সভাপতি মফিজুল হক ও সাধারণ সম্পাদক খাজা নাজিম উদ্দীন। অন্য ভাগের নেতৃত্বে আছেন নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক।
নড়াগাতি থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খাজা নাজিম উদ্দীন বলেন, শুনেছি থানার ছয়টি ইউনিয়ন থেকে দু’টি পক্ষের কাউন্সিলারদের নামের তালিকা জেলা আ্ওয়ামী লীগ অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, থানা কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত কাউন্সিলদের নামের তালিকা সঠিক। অন্য কোন তালিকা গ্রহণযোগ্য নয়। কোন প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠন করলে ভালো হয়-এ প্রশ্নে খাজা নাজিম উদ্দীন বলেন, জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভ’ঙ্গ করে দলের প্রার্থীর বিরো’ধীতা করেছিল তাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের দাবি করেন ।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বশিরুল ইসলাম এবং মোঃ হাসনাত চৌধুরী বলেন, আমরা হানাহানি, দ্ব’ন্দ্ব-সং’ঘাত চাই না। প্রকৃত আ’ লীগ যারা করেন তাদের কাউন্সিলর করে ভোটে নেতা নির্বাচন চাই। আমরা আশাকরি জেলা নেতৃবৃন্দ এবং সাংসদ সেটা করবেন ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। জাতীয় সংসদের হুইপ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন, নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক এমপি, নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস বোস ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন খান নিলু।
সম্মেলন সফল করতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ৫০টি তোড়ণ নির্মাণ করা হয়েছে। তোড়ণগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা। সম্মেলনস্থল কাছারিঘর, মাঠ ও আশপাশের এলাকা ছেয়ে গেছে ব্যানার-ফেষ্টুনে। জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিটুল কুন্ডু বলেন, নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১০ অক্টোবর দলীয় কার্যালয়ে নড়াগাতি থানা আ্ওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়েছে। তিনি বলেন, ছয়টি ইউনিয়ন থেকে দুটি করে কাউন্সিলারের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। জেলা নেতৃবৃন্দ, নড়াইল-১ আসনের সাংসদ এবং নড়াগাতি থানা আ’লীগের সভাপতি–সম্পাদককে নিয়ে একটি কাউন্সিলরের নামের তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।