ডেস্ক রিপোর্ট
রবিবার (১০ নভেম্বর) বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শহীদ নূর হোসেন দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৮৭ সালের এই দিনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের র’ক্তে র’ঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তার আ’ত্মত্যাগে তৎকালীন স্বৈ’রশা’সনের বিরু’দ্ধে গনতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনকে গতিশীল করে।
রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানের নূর হোসেন স্কয়ারে (জিরো পয়েন্টে) ফুল দিয়ে শহীদ নূর হোসেনকে স্মরণ করেন ও শ্রদ্ধা জানান সর্বসস্তরের রাজনৈতিক নেতাকর্মী। সকাল সাড়ে ৯ টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে নেতৃত্বে নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এ সময় নূর হোসেনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেন র’ক্ত দিয়েছিলেন দেশে সেই গণতন্ত্র বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে একটি সেনা উত্থা’নের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। ১৯৮৭ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করলে বিরোধী দলগুলো তার এই নির্বাচনকে জালি’য়াতি বলে অভিযুক্ত করে ১০ই নভেম্বর দেশের দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এক হয়ে এরশাদের পতনের লক্ষ্যে ঢাকা অবরো’ধ কর্মসূচির ঘোষণা করে।
অবরো’ধে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ কর্মী নূর হোসেন। তার বুকে পিঠে সাদা রঙে লেখা ছিল, ‘স্বৈ’রাচার নিপা’ত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। মিছিলটি ঢাকা জিপিও-র সামনে জিরো পয়েন্টের (বর্তমান নূর হোসেন চত্ত্বর) কাছে আসলে পুলিশবাহিনীর গু’লিতে নূর হোসেনসহ মোট তিনজন আন্দোলনকারী নিহ’ত হন, এসময় বহু আন্দো’লনকারী আহত হন। নিহ’ত অপর দুই ব্যক্তি হলেন যুবলীগ নেতা নুরুল হূদা বাবুল এবং আমিনুল হূদা টিটু।
এই হ’ত্যাকা’ন্ডের ফলশ্রুতিতে বিরোধী দলগুলো ১১ ও ১২ই নভেম্বর সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতা’ল ঘোষণা করে। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জেনারেল এরশাদ পদত্যা’গ করেন। ১৯৯৬ সালে নূর হোসেনের মৃত্যুর জন্য এরশাদ জাতীয় সংসদে অফিসিয়াল ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ই নভেম্বরের স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বলেছিলেন, সেদিন আমরা যখন মিছিল শুরু করছিলাম তখন নূর হোসেন আমার পাশে দাড়িয়ে ছিল। আমি তাকে কাছে ডাকলাম এবং বললাম তার গায়ের এই লেখাগুলোর কারণে তাকে পুলিশ গু’লি করবে। তখন সে তার মাথা আমার গাড়ির জানালার কাছে এনে বলল, “আপা আপনি আমাকে দোয়া করুন, আমি গণতন্ত্র রক্ষায় আমার জীব’ন দিতে প্রস্তুত।” (ছবিঃ দিনু আলম)