স্টাফ রিপোর্টার
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের শিষ্য, নড়াইল সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক চিত্রশিল্পী নিখিল চন্দ্র দাস একটি আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার “ওয়ার্ল্ড আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড” সম্মানে ভূষিত হওয়ায় তাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২টায় নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, নড়াইল পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন সিকদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয় কুন্ডু, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবির টুক, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু, সংবর্ধিত শিল্পী নিখিল চন্দ্র দাস প্রমুখ।
জানা গেছে, ভারতের উড়িষ্যার তৃতীয় আন্তর্জাতিক আর্ট ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার “ওয়ার্ল্ড আর্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড” সম্মানে ভূষিত হন। প্রদর্শনীতে তার ছবির মাধ্যম ছিল “গ্রামীণ পটভূমিতে আঁকা পটচিত্র”। গত ১১ জানুয়ারী থেকে ১৪ জানুয়ারী উড়িষ্যার ভূবেনশ্বর ঢাউলি আর্টস এন্ড ক্রাফ্টস কলেজে এ প্রদর্শনীর সমাপনি অনুষ্ঠানে তাকে এ পদক প্রদান করেন। প্রদর্শনীতে অষ্ট্রোলিয়া, দক্ষিন কোরিয়া, নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ১শ ৫০জন চিত্রশিল্পী অংশগ্রহণ করেন।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের শিষ্য নিখিল দাস বর্তমানে পটচিত্র, লোকজ গল্প, লোকজ গান, ছড়া, নৃত্য ও নৃত্যের মুদ্রা, কিচ্ছাকাহিনী, রূপকথা সংগ্রহ করে গবেষণামূলক কাজ করছেন এবং এসব বিষয়ের ওপর ছবি আঁকেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, ভারত, জাপান, অষ্টোলিয়া, আমেরিকার বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গায় তার ছবি স্থান পেয়েছে এবং তিনি যথেষ্ট প্রশংসাও কুড়িয়েছেন।
শিল্পী নিখিল দাস বলেন, পটুয়ারা এক সময় ছবি এঁকেছেন শখের হাড়িতে, লক্ষীর সরায়, কাপড়,পিড়িঁ ইত্যাদিতে। সে সময় প্রতিটি গ্রামে পট গান গাওয়া হতো। এখন এসব গান প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। হারিয়ে যাওয়া এসব স্মৃতি ধরে রাখতে পটচিত্র এঁকে যাচ্ছেন। এক সময় যেভাবে পটগুলো আঁকা হতো এবং যে ধরনের রং ব্যবহার করা হতো সে বিষয়ে ব্যাপক খোঁজ খবর নিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
জানা যায়, ১৯৭৮ সালে এস এস সি পাশ করেন। ১৯৮০ সালে বরেণ্য শিল্পী সুলতানের অনুপ্রেরণায় রাজশাহী চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৮৩ সালে প্রি-ডিগ্রি এবং ১৯৮৮ সালে চারু ও কারুকলা ইনষ্টিটিউটের কারুকলা বিভাগ থেকে বিএফএ পাশ করেন।