স্টাফ রিপোর্টার
এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার গন্ডব ও চালিঘাট গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় ২০টি বাড়ী ও ২টি দোকান ঘর ভাংচুর করে মালামাল ও আসবাবপত্র লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে আটক করে এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব ও চালিঘাট গ্রামের আধিপত্য নিয়ে জেলা পরিষদ সদস্য সুলতানুজ্জামান বিপ্লব শেখ ও ছলেমান মেম্বরের লোকদের সাথে প্রতিপক্ষ মিরাজ মোল্যা ও মোস্ত মোল্যার লোকদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ছলেমান মেম্বর ও জিরু শেখ আহত হয়। পরে রাত ১১টার দিকে বিপ্লব ও ছলেমান মেম্বরের লোকজন ঢাল, শড়কি,রামদা ও লাঠিশোটা নিয়ে প্রতিপক্ষ গন্ডব গ্রামের শামীম ও ইউসুফের দোকানঘর এবং একই গ্রামের আলম মোল্যা, চুন্নু মোল্যা, কোবাদ মোল্যা, জাকির মোল্যা, ওবায়দুর মোল্যা, খবির শেখ, মাহমুদ শেখ, মটুক শেখ, হাসমত শেখের বাড়ী এবং চালিঘাট গ্রামের শরিফুল মোল্যা, বাশার মোল্যা, হায়াতুর মোল্যা, রিজাউল শেখ ও ছাইফার শেখের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এ সময় হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধা ওমর মোল্যা, নিকছার মোল্যা ও রাজা আলীর বীর নিবাসে হামলা চালায় ও তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। হামলায় সুফিয়া খানম, নার্গিস বেগম, সুমী খানম, কনক বেগম,রেহেনা খান, রিজাউল শেখ, রফিক শেখ, জামাল শেখ, চন্নু মোল্যা আহত হয়। আহতদের লোহাগড়া, নড়াইল সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ওই গ্রাম দুটিতে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে আতংকের মধ্যে আছে গ্রামের মহিলা ও শিশুরা।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংঘর্ষের ভয়ে গন্ডব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেনি। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোসাঃ জোস্না খানম জানান, বেশীরভাগ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেনি, যারা এসেছিল তারাও ভয়ে বাড়ীতে চলে গেছে। গন্ডব গ্রামের কনক বেগম, সুফিয়া খানম জানান, বিপ্লবের চাচা পুলিশের বড় অফিসার হওয়ার কারণে ক্ষমতার দাপটে পুলিশের সামনে ওরা আমাদের উপর হামলা চালায় ও বাড়ীঘর ভাংচুর করেছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মোমরেজ মোল্যার বাড়ী থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় ওই বাড়ী থেকে ১২টি শড়কি, ৯ টি ঢাল, ৭ টি ছোরা চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।