নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআনখানি, শোভাযাত্রা, স্মৃতিস্তম্ভে গার্ড অব অনার প্রদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট্রের সদস্য সচিব আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা এস এ মতিন, জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে গোলাম মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ করা হয়। এই বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে এখানে নির্মিত হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’, ‘স্মৃতিস্তম্ভ’, ‘স্কুল এবং কলেজ’ এবং নড়াইল শহরে ‘স্টেডিয়াম’।
নূর মোহাম্মদ শেখের জীবনী থেকে জানা যায়, তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছা (মতান্তরে জেন্নাতা খানম)। নূর মোহাম্মদ বাল্যকালে বাবা ও মাকে হারান। পড়েছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে, মতান্তর রয়েছে। নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) নামে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান নূর মোহাম্মদ। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮
নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে
সম্মুখ যুদ্ধে মৃতুবরণ করেন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।