করোনা সংকটে আমরা ঝুঁকি নিচ্ছি, আপনি দয়া করে আপনার নির্দেশনা মেনে চলুন

3
109
করোনা সংকটে আমরা ঝুঁকি নিচ্ছি, আপনি দয়া করে আপনার নির্দেশনা মেনে চলুন
মোঃ মাসুম আরেফিন, উপপরিচালক (প্রধান কার্যালয়), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর

সারা পৃথিবীর মানুষের মুখে এখন আত*ঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এই পৃথিবীর, অনেক তাজা প্রাণ কে*ড়ে নিয়েছে এই ঘা*ত*ক। অনেক পরিবারের স্বপ্ন ন*ষ্ট করেছে এই য*মদূ*ত। ছি*ন্ন করে চলেছে মানুষের, ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন গুলোকে। আমাদেরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া প্রয়োজন কিনা? নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের আপামর জনসাধারণের জন্য।

ইতিহাস বলে ১৯৭১ সালের যু*দ্ধটা ছিল সবার। ঘর থেকে বাহিরের, শ*ত্রুর সাথে সম্মুখ সম*রে। মানুষের সাথে অমানুষের, অঞ্চলের সাথে অঞ্চলের, আদর্শের সাথে অনাদর্শের আর দর্শনের সাথে দর্শনের। ২০২০ সালের অদৃশ্য ঘা*ত*কের বিরুদ্ধে গোটা পৃথিবীর মহাযু*দ্ধ। সচেতন ভাবে ঘরে থাকা, এ যু*দ্ধের সর্বোত্তম কৌশল; নিজেকে ও প্রিয় দেশের মানুষকে বাঁচাবার। কোন কামান, ব*ন্দুক, বো*মা ও দেশীয় অ*স্ত্র লাগবে না অদৃশ্য শ*ত্রুর মোকাবেলা করতে। সচেতনতা ও সরকারি দিকনির্দেশনা মেনা চলায় একমাত্র হা*তিয়ার আমাদের।

এই যু*দ্ধের সম্মুখ স*মরে রয়েছে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, ব্যাংকার, নিত্য পণ্যের যোগানদার ও খুচরা বিক্রেতা, সেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ অনান্য সরকারি ও বেসরকারি জরুরী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসমূহ, যারা জীবন ও পরিবারের মায়া ত্যাগ করে অহোরাত্রী কাজ করে যাচ্ছে চরম ঝুঁ*কির মধ্যে, শুধু চাকরি বা নিজেদের স্বার্থের জন্য নয়, বরং মানুষের জন্য ভালোবাসা থেকে সেবার মনোভাব নিয়ে, স্বীয় মায়া ত্যাগ করে যু*দ্ধ যাচ্ছেন এই যো*দ্ধারা। স্যালুট জানাই আপনাদের।

আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে বলছি না, একবার ভেবে দেখেন এদের পরিবার আছে, বেঁচে থাকার স্বপ্ন আছে অথচ তাঁরা আপনার জীবন বাঁচাতে সামগ্রিক সেবা দিচ্ছেন। মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আপনি যখন নিজের ঘরে, তখন তাঁরা অন্যের ঘরে, পথে -ঘাটে, মাঠে, হাটে, অলিতে-গলিতে; মানুষের প্রয়োজনে মানুষের পাশে রয়েছে।

রো*গীতো দূরের কথা তার ছায়ার কাছ থেকে সরে যাচ্ছে সভ্য সমাজের মানুষগুলো৷ আক্রা*ন্ত মৃ*ত ব্যক্তির সৎ*কারে লোক পাওয়া যাচ্ছে না এখন। বাবা-মা স্পর্শ করছে না সন্তান কে। হাতে হাত ধরে চলে না প্রিয়জন বা বন্ধুরা। সবার জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত সবাই। সেখানে যারা আপনাদের সেবায় নিয়োজিত, তাদের কথা একটু ভাবুন তো??

আজ বিশাল জনগোষ্ঠীর কল্যাণ সাধনে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। যদিও নে*তিবাচকেরা বলবেন, “এটাতো কর্তব্য??” আমি বলি ভিন্ন কথা, সরকার হলো দেশের প্রতিটি জনগণ। আমরা যারা আছি, তারা আপনাদেরই বেতনভুক্ত কর্মচারী। আমরা ঝুঁ*কি নিতে প্রস্তুত বা নিচ্ছি, আপনি দয়া করে সরকারের তথা আপনার নির্দেশনা মেনে চলুন। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন, সুস্থ ও সুন্দর রাখুন…পাশাপাশি গু*জব থেকে দূরে থাকুন ও দূরে রাখুন।

সমালোচনা থাকলে করবেন, আগে সং*কট কাটুক, অনেক সময় পাবেন। ভালোবাসা না পাই, আপাতত ঘৃ*ণার বস্তু বানাবেন না। ভুলগুলো ধরিয়ে শুধরে দিবেন, সুন্দর ও সঠিক পরামর্শ দিবেন, যারা কাজ করে তাদেরই তো ভুল হয় ও সমালোচনা থাকে। যার যার অবস্থানে থেকে সবাই সরকারকে (জনগণকে) সার্বিক সহযোগিতা করুন। তাহলে যো*দ্ধারা অনুপ্রাণিত হবে, নিজেরা আরো বেশি ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবে। তবেই অদৃশ্য ঘা*তকের বিরু*দ্ধে চুড়ান্ত ল*ড়াইয়ে জয়ি হতে পারবো, আমরা সবাই।

কিছু অ*বিবেচক আছেন, যারা নিজের কর্তব্য পালন না করে অলস মস্তিষ্কে বিভ্রা*ন্ত করছেন প্রতিনিয়ত, দেশের আপামর জনসাধারণকে। ধি*ক্কার জানাই তাদের।
আশাবাদী আমি, তাই বিশ্বাস করি, এই অন্ধকার দূরীভূত হবে, সোনালী সূর্য উঠবেই, চুড়ান্ত বিজয় আসবেই। শুধু স্বীয় অর্পিত কাজ সঠিক ভাবে পালন করব বা করবেন। আসুন ধর্ম, বর্ণ, মত নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়াই।

মানুষকে মুখেমুখে, ফেসবুক, ব্লগ, হোটসআপ, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, ইউটিউবে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই বিপ*র্যয়ের সময়ে এমন কোন কথা, পোষ্ট, ভিডিও, এসএমএস, স্ট্যাটাস, ছবি দিব কেন যা দেশে এই মহা*মারিকালীন মানুষের মনে নেতিবাচক প্র*ভাব বিস্তার করে। জনমনে বিভ্রা*ন্তি ছড়ালে তারা আশাহত হবে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করতে বেগ পেতে হবে।

হাজার বছরের ইতিহাস বলে মানুষ প্রকৃতি ও মহা*মারির সাথে অনেক সং*গ্রাম চলে এসেছে আজকের এই করোনা আক্রান্ত পৃথিবীতে। অনেক সংঘা*ত ও সংগ্রামেও দমেনি মানুষ। সাময়িক কষ্ট হয়েছে বৈকি। কিন্তু মানবিকতার জয় হয়েছে সবসময়, মুক্ত হয়েছে,জয় পেয়েছে। সবার স্থান থেকে সঠিক ভাবে কর্তব্য পালন করলে মুক্তি পাবে মানবতা, মুক্তি পাবে মানুষ- একদিন ঝড় থেমে যাবে…/ পৃথিবী আবার শান্ত হবে…(নচিকেতা)। আমরাও একদিন শান্ত হবো, মুক্তি পাবো।

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু‘র বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা প্রিয় বাংলাদেশকে (প্রিয় মাতৃভূমি) পেয়েছি, পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। আজ ২০২০ সালে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রিয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে, আমরা আমাদের প্রিয় স্বাধীন দেশে অদৃশ্য করোনা ঘা*তকের বিরুদ্ধে জয় লাভ করব! ইনশাআল্লাহ…। বি: দ্র: বিশেষ কৃতজ্ঞতা বন্ধু জাহিদের প্রতি যিনি এই লেখাটি লিখতে আমাকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।

লেখকঃ মোঃ মাসুম আরেফিন
উপপরিচালক (প্রধান কার্যালয়)
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর