স্টাফ রিপোর্টার
দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হবার পর থেকেই জেলার সাংবাদিকেরা সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রচার করে আসছে। বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে নড়াইল সিভিল সার্জন অফিস থেকে সঠিত তথ্য পাওয়ায় জেলা সিভিল সার্জন অফিসের গড়িমশি আর সময় ক্ষে*পণে ক্ষু*ব্ধ হয়ে উঠেছে মিডিয়া কর্মীরা। এ ব্যাপারে ১৫ এপ্রিল নড়াইল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা সভা করে সিভিল সার্জন অফিসের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করে নি*ন্দা জানিয়েছেন।
নড়াইল প্রেসক্লাব সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত করোনা নমুনা সংগ্রহ, আইসুলেশন, হোম কোয়ারেন্টেন বিষয়ে তথ্য জানার জন্য জেলা সিভিল সার্জন অফিসে প্রতিনিয়ত ফোনে যোগাযোগ করা হয়। সিভিল সার্জন অফিসে কে তথ্য দিবেন এমন কোন সোর্স তৈরী হয়নি। সিভিল সার্জন কে ফোন করলে সরাচরার পাওয়া যায়না। ফোনে পাওয়া গেলেও সঠিক তথ্য পেতে কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যায়। এই অবস্থায় ঢাকায় সঠিক সময়ে তথ্য না পাঠাতে পেরে জেলার তথ্য প্রদানে একধরনের হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত সাংবাদিকরা।
নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু বলেন,একে তো সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না উপরন্ত টেলিভিশনের সাংবাদিক সিভিল সার্জন অফিসে গেলে তাদের অপমানসূচক আচরণ করেন সিভিল সার্জন অফিসের দুইজন চিকিৎসক। এই অবস্থায় তথ্য আনতে সাংবাদিকরা ঐ অফিসে যেতে কুণ্ঠাবোধ করেন। সম্প্রতি এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে যার আমরা তীব্র নি*ন্দা জ্ঞাপন করছি।
নড়াইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু বলেন, যেহেতু করোনা প্রতিরোধ জেলা কমিটির সদস্য সচীব সিভিল সার্জন। জেলার সমন্বিত তথ্য তার অফিসেই পাওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে তথ্য আনতে গিয়ে যদি সাংবাদিরা বাঁ*ধাগ্রস্ত হন তাহলে আমরা কি কাজ করবো কখনও সঠিত তথ্য পাওয়া যায়নি। আর সিভিল সার্জন সাহেব তো ফোনই ধরেন না।
নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধি মীর্জা নজরুল ইসলাম বলেন, সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারনে আমরা সঠিক সময়ে ঢাকায় তথ্য প্রেরন করতে পারছি না, এছাড়া করোনা নমুনা সংগ্রহ একেবারেই ধীর গতিতে চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার একজন কর্মকর্তা বলেন, এ সময়ে সবচেয়ে যার গতিশীল হবার কথা, সেই সিভিল সার্জন সাহেবের ধীরগতি এবং সমন্বয়হীনতার ব্যাপারে আমাদের এমপি মাশরাফী ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
নড়াইল জেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক ও একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল বলেন, আমি কয়েকদিন আগে সিভিল সার্জনের একটি বক্তব্য আনতে গিয়ে ঐ অফিসের দুইজন ডাক্তারের দ্বারা অপমানিত হয়েছি। এরপর তথ্য আনতে ঐ অফিসে যাই না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরত দুইজন চিকিৎসকের একজন ডাঃ সৈয়দ শফিক তমাল (এম ও ডিসি) তিনি করোনা তথ্য সংগ্রহ ও প্রদানে নিয়োজিত বলে নিজেকে পরিচয় দিলেও সাংবাদিকরা তথ্য জানতে চাইলে তিনি সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলতে বলেন। অন্যজন ডাঃ অনিন্দতা ঘোষ (এমও সি এস) তিনি সদরের মাইজপাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দ্বায়িত্বে থাকলেও সিভিল সার্জন অফিসে সংযুক্তি নিয়ে বসে আসেন। উল্লেখ্য, মাইজপাড়া ইউনিয়ন সংসদ সদস্য মাশরাফির গ্রামের বাড়ি।
নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, যেখানে আমাদের কয়েকজন চিকিৎসক মাঠে এবং হাসপাতালে দিনরাত পরিশ্রম করছেন সেখানে উর্ধ্বতন কর্মকতার মেয়ে হবার সুবাদে তিনি সিভিল সার্জন অফিসে বসে আসেন, উনারা এসির মধ্যে বসে কি কাজ করেন?
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সিভিল সার্জন ডা. এম এ মোমেনের সাথে ৩ বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, সাংবাদিকেরা সঠিক তথ্য দিয়ে সরকারী কাজ তথা জনগনের উপকার করে থাকে, সিভিল সার্জন কেন সমন্বয় করবেন না, এটা আমি দেখছি।