স্টাফ রিপোর্টার
করোনা উপসর্গে মৃ*ত নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া এলাকার বিশ্বজিত রায় চৌধুরী (৫০) করোনাক্রা*ন্ত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা। তিনি বলেন, করোনা উপসর্গে মৃ*ত বিশ্বজিত রায় চৌধুরীর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট মঙ্গলবার (১২ মে) রাতে পেয়েছি। রেজাল্ট পজিটিভ এসেছে। অর্থাৎ তিনি করোনাক্রা*ন্ত হয়ে গত ৯ মে রাতে মৃ*ত্যুবরণ করেন।
এদিকে, কালিয়ার খাশিয়াল গ্রামের মসজিদের এক মুয়াজ্জিনের (৬০) করোনাভাই*রাস সনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে কালিয়া ইউএনও বলেন, করোনাক্রা*ন্ত মুয়াজ্জিনকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া তার পরিবারের সদস্যদেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
ইউএনও নাজমুল হুদা আরো বলেন, বিশ্বজিত রায় চৌধুরীর মৃ*ত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ ও সৎ*কারসহ অন্যান্য কাজে আমরা কয়েকজন সংশ্লিষ্ট ছিলাম। এর মধ্যে আমার এবং সাংবাদিক ফসিয়ার রহমানহ পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বুধবার খুলনায় পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
অন্যদিকে মৃ*ত বিশ্বজিত রায় চৌধুরীর সংস্প*র্শে না আসলেও তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের নমুনা সংগ্রহ করে গত মঙ্গলবার পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের বিশ্বজিত রায় চৌধুরী করোনা উপসর্গে গত ৯ মে গভীর রাতে মা*রা যান। যদিও তার মৃত্যুর পর পরিবারের কেউ সৎ*কারসহ অন্যান্য কাজে এগিয়ে আসেননি। ঘরের মধ্যে তার মৃ*তদে*হ রেখে আ*ত্মগোপনে যান স্ত্রী ও সন্তানসহ আ*ত্মীয়-স্বজনেরা।
এ পরিস্থিতিতে নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা ও কালিয়া প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সাংবাদিক ফসিয়ার রহমানসহ চারজন ঘর থেকে বিশ্বজিত রায় চৌধুরীর লা*শ বের করেন, চি*তায় উঠান এবং স*ৎকারের ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি নিয়ে নড়াইলসহ আশেপাশের জেলায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।
কালিয়ার বড়দিয়া গ্রামের নির্মল রায় চৌধুরীর ছেলে বিশ্বজিত রায় চৌধুরী ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরি করতেন। ঢাকা থেকে কা*শিসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃ*ত্যুর দু’দিন আগে বাড়িতে আসেন তিনি।
এদিকে, বিশ্বজিত রায় চৌধুরীর মৃ*ত্যুর পরেরদিন (১০ মে) সিভিল সা*র্জনের উদ্ধৃতি দিয়ে কয়েকটি টিভির স্ক্রলে ব্রেকিং নিউজে বলা হয়-নড়াইল জেলাকে ‘করোনামুক্ত ঘোষণা’ করা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মী, প্রশাসন ও জনসাধারণের মধ্যে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হয়।
অনেকই মন্তব্য করেন, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কীভাবে একটি জেলাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হলো! রো*গ তত্ত্ব, রো*গ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা তৎসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘোষণা ছাড়া কীভাবে নড়াইল জেলা করোনামুক্ত হলো। এ বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকেও সমালোচনা ঝড় উঠে।
বিভিন্ন পেশার মানুষ এ সংবাদ প্রচারের জন্য নানা মন্তব্য করেন। আর সিভিল সা*র্জন ডাক্তার আব্দুল মোমেনের সাথে এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগোযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।