নড়াইলে এসএসসিতে সাফল্য পাওয়া শিক্ষার্থী প্রীতির পাশে দু’জন শুভাকাঙ্ক্ষী

2
70
নড়াইলে এসএসসিতে সাফল্য পাওয়া শিক্ষার্থী প্রীতির পাশে দু'জন শুভাকাঙ্ক্ষী
নড়াইলে এসএসসিতে সাফল্য পাওয়া শিক্ষার্থী প্রীতির পাশে দু'জন শুভাকাঙ্ক্ষী

স্টাফ রিপোর্টার

এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া প্রীতি বিশ্বাসের শিক্ষা জীবনকে এগিয়ে নিতে পাশে এসে দাঁড়ালেন নড়াইলের একজন ঠিকাদার। তিনি প্রীতির উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি এবং আগামি দু’বছর প্রতি মাসে লেখাপড়ার খরচ হিসেবে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

নড়াইল সদরের অজপাড়াগাঁ মালিয়াট গ্রামের সুবিধা ব*ঞ্চিত প্রীতি বিশ্বাসের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি বিশিষ্ট ঠিকাদার এস তারেক হাসানের নজরে এলে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে ভাংগুড়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজের কেমিষ্ট্রি বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক গোলক চন্দ্র বিশ্বাস প্রীতিকে ফ্রি প্রাইভেট পড়ানোর দায়িত্ব নিতে চেয়েছেন। তাদের এই মহানুভাবতায় নড়াইলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সদরের মালিয়াট গ্রামের ভূমিহীন কৃষি শ্রমিক তাপস বিশ্বাস এবং শ্রমজীবী মা রিনা বিশ্বাসের কন্যা প্রীতি বিশ্বাস সদরের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে।

২ বোন, বাবা-মা, দাদীসহ ৫জনের এতো বড় সংসারে থাকার একটিমাত্র ঘর। বড় বোন আশা বিশ্বাস যশোরে একটি নার্সিং কলেজে লেখাপড়া করে। বসবাসের জায়গাটুকু ছাড়া চাষের কোনো জমি নেই। বাবা-মা দুজনই মাঠে শ্রম বিক্রি করেন। বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গরু পালন সংসারের কিছু বাড়তি আয় হয়।

সংসারের উজান ঠে*লতে প্রীতি এবারও মাঠে বোরো ধান কে*টেছে এবং বাড়িতে বহন করে এনেছে। লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে মাঠে ধানের চারা (পাতো) তোলা, ফসল নি*ড়ানির কাজ করা, পাটের আঁশ ছা*ড়ানো ইত্যাদি কাজে শ্রমজীবী বাবা-মাকে সাহায্য করেছে। অর্থের অভাবে তেমন একটা ভালো পোশাক পরতে পারেনি। লেখাপড়ার ভালো পরিবেশও পায়নি। কোনো বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের কাছে স্পেশালভাবে প্রাইভেট পড়তে পারেনি। সবকিছু সামলিয়ে বাড়ি থেকে ৮ মাইল পথ বাইসাইকেলে গিয়ে স্কুল করেছে।

প্রীতির ইচ্ছা চিকিৎসক হবার। বাবা-মা অর্থের অভাবে স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হবার কথা বলেছেন। কিন্তু পরবর্তী ধাপে ভালো ফলাফলের জন্যতো একটি ভালো কলেজে পড়ার দরকার। সে ধাপকে অতিক্রম করতে প্রীতির এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতে একটু ছায়া দিতে এগিয়ে আসলেন নড়াইলের এস তারেক হাসান ও কেমিষ্ট্রি বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক গোলক চন্দ্র বিশ্বাস।