স্টাফ রিপোর্টার
করোনা শুরু থেকেই একমাত্র ঔ*ষধের দোকানই সারাদিন খোলা থাকে। জ্ব*র-শ্বা*সক*ষ্ট সহ করোনা চিকিৎসার প্রাথমিক ঔ*ষধগুলো কিনতে হিড়িক পড়ে যায় সাধারণ জনগণের মধ্যে। এই সুযোগে জেলার বিভিন্ন ঔ*ষদের দোকান নানাভাবে প্র*তারনা করে আসলেও যেন দেখার কেউ নাই। ভিটামিন ডি থ্রি-ব’ন এই ই’ন*জেকশন টি শরী*রে রো*গ প্রতিরো*ধ ক্ষ*মতা বাড়ায় বলে এর চাহিদা বেড়ে যায়। ১২০টাকার এই বিদেশী এই ঔ*ষধটি এখন ৩’শ টাকায় বিক্রি করছে দোকানীরা। উপায় না পেয়ে কয়েকগুন বেশী টাকা দিয়েই তা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভূ*ক্তভো*গীরা। এর মতো আরো জরুরী কিছু সাধারণ ঔ*ষধের দামও নিচ্ছে দোকানদারদের খুশী মতো।
নড়াইলের বলাকা ফা’র্মেসী। জেলার অন্যতম বড় ঔষ*দের দোকান। সব ধরনের ঔ*ষধ যেমন পাওয়া যায় তেমনি সুবিধামতো দাম হাকানো, স্বল্প মেয়দ এমনকি মেয়াদো*ত্তীর্ন ঔ*ষধ বিক্রি সহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে এই ফার্মে’সীর বিরু*দ্ধে। করোনাকালীন সময়ে অতি জরুরী ঔ*ষধ কিম্বা চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বেশী নিয়ে এলাকার মানুষকে বি’ষিয়ে তুলেছে সদর হাসপাতালের ঔ*ষ*ধ সিন্ডি’কেট।
গত ২৬ জুলাই ২টি ভিটামিন ডি ইন*জে*কশন কিনেছিলেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম। বাড়িতে নিয়ে দেখেন তার গায়ে একটি সীলে ২৪০ টাকা দাম লেখা আছে। পরবর্তীতে ৩ আগষ্ট সন্ধ্যায় একই ঔ*ষধ আরো ৪ প্যাকেট কিনলে একই দাম ধরে দোকানী। প্যাকেটের গায়ে দাম দেখানোর পরেও দোকানী বলে এটাতো বিদেশী ঔ*ষধ, এক পর্যায়ে আগের দিনের দুটি সহ ৬টি ঔ*ষধের অতিরিক্ত ১৮০টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয় বলাকা ফা*র্মেসীর মালিক নিতাই সাহা।
একই দোকান থেকে মাল কিনে প্রতিনিয়ত ঠ*কছেন হাজারো মানুষ। ইব্রাহিম বাবু নামের একজন ক্রেতা জানান, বলাকা ফার্মেসী একটি অক্সি*মিটারের একদাম হাকায় ২ হাজার টাকা, যা আমি যশোর থেকে আরো ভালোটা কিনেছি ১১’শ টাকা দিয়ে। এরা একটা ডাকা*ত, মানুষের দু*র্দিনের সুযোগ নিয়ে গ*লাকা*টা দাম রাখছে।
আজাদ রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আমি বলাকা ফার্মেসী থেকে একটি নেবু*লাইজার মে*শিন কিনেছি ২হাজার টাকা দিয়ে, যা পাশেই বিক্রি হচ্ছে ১৫’শ টাকা। এরা সাধারণ মানুষের চো*খে ধু*লো দিয়ে এভাবে ঠ*কিয়ে যাচ্ছে অথচ প্রশাসনের কেউ তাদের বিরু*দ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঔ*ষধের দাম কিছুটা সহনশীল হলেও নড়াইল সদর হাসপাতাল কেন্দ্রীক একটি সিন্ডি’কেট গড়ে উঠেছে। এই সি’ন্ডিকেটের হো’তা বলাকা ফার্মে’সীর মালিক নিতাই সাহা। এরা নিজেদের ইচ্ছামতো জরুরী ঔ*ষধগুলোর দাম নির্ধারন করে।
মো. ইমন আহম্মেদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, আমি একটি ভিটামিন ডি থ্রি কিনেছি ৩’শ টাকা দিয়ে। ব’ডিরেট ২৪০টাকা থাকলেও হাসপাতাল মার্কেটের সবগুলো ঔ*ষধের দোকানে একই দাম চেয়েছে।
ইচ্ছেমতো ঔ*ষধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বেশী নেয়া প্রসঙ্গে বলাকা ফার্মে’সীর মালিক নিতাই সাহা বলেন, বিদেশী ঔ*ষধ এর দাম অনেক সময় কমবেশী হয়, অন্য কোন সম’স্যা নাই। তাছাড়া আমিতো ঐ সাংবাদিকের টাকা ফেরত দিয়েছি।
ঔ*ষধের দাম বেশী এবং সিন্ডি’কেট প্রসঙ্গে বিসিডিএস (বাংলাদেশ কে’মিষ্ট এন্ড ড্রা*গিষ্ট সমিতি) নড়াইলের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল্লাহ হেল বাকি বলেন, ঔ*ষধের গায়ে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কারো কোন দাম বেশী নেবার সুযোগ নাই, যদি কেউ করে থাকে তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে তার ব্যবস্থা নেবে সমিতি, এর আগে অনেক মোবাইল কোর্টকে এ ব্যাপারে সহায়তা করেছি।
নড়াইল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (নেজারত ডেপুটি কালেক্টর-এনডিসি) জাহিদ হাসান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ প্রায়ই পাচ্ছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা সহ আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এর সহকারী পরিচালক (অতিঃ দায়িত্ব) মোহাম্মদ মামুনুল হাসান বলেন, অনেক চিকিৎসা সর’ঞ্জাম এর গায়ে দাম নির্ধারন থাকে না এটা ঔ*ষধ প্রশাসন জানে, তাছাড়া দাম নির্ধারন করা ঔ*ষধের মূল্য বেশী নিলে প্রমাণ সাপেক্ষে ভোক্তা অধিকারে আবেদন করলে ৩০ দিনের মধ্যেই তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য যশোরে কর্মরত ড্রা*গ সুপারেন্টেন্ড মো. রেহান হাসানের মুঠোফোনে নম্বরে ফোন করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।