ডেস্ক রিপোর্ট
খুলনা মংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের ৬৯ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। ২০১০ সালে মংলা বন্দর থেকে সড়কপথে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটির কাজ শেষ করার সময় নির্ধারিত ছিল তিন বছরের। কিন্তু তিন দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ১০ বছরেও শেষ হয়নি। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন ৯০ একর জমির ওপর দিয়ে রেলপথ নির্মাণ নিয়ে বিরো*ধ রয়েছে। এর ফলে প্রকল্পটির কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সূত্রে জানা যায়, রেলপথ নির্মাণ কাজের শুরুতে মংলা বন্দরের মধ্যে কিছু রেল স্ট্যা’ক করার কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইরকনের মধ্যে সং*কট তৈরি হয়। এতে আট*কে যায় প্রকল্প কাজের অগ্রগতি। প্রকল্পের মূল কাজ রেলপথ নির্মাণে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। এরই মধ্যে তিন দফা বাড়ানো হয়েছে কাজের ব্যয় ও মেয়াদ। ফলে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১২১ শতাংশ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, চলমান খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি এ অঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। জমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টরা গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। ফলে জমি নিয়ে বিরো*ধ দূর হয়ে যাবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনালের মংলা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান, করোনা পরিস্থিতিসহ অন্য জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আবারও ব্যয় এবং মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, জমির জটিলতা এ প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে নানা সময়ে প্রতিব*ন্ধকতা তৈরি করেছে। নতুন করে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিয়ম অনুসারে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন জমিগুলো রেলপথ মন্ত্রণালয়ে দ্রুত হস্তান্তর করা হলেই আমরা কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের কয়েকটি বৈঠক হয়েছে।
জানা গেছে, খুলনা-মংলা বন্দর রেলপথ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যেখানে ভারতীয় ঋণ ১ হাজার ২২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এছাড়া সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা সরবরাহের কথা ছিল।
কিন্তু বাস্তবায়নে বিলম্ব ও বিস্তারিত নক’শা প্রণয়ন শেষে ব্যয় বেড়ে যায়। এতে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৪৩০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ও ভারতীয় ঋণ পাওয়া যাবে ২ হাজার ৩৭১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ফলে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে গেছে ২ হাজার ৮০ কোটি ২২ লাখ টাকা। পাইলিংয়ে জটিলতা ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। আটটি স্টেশনের মধ্যে দুটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের (আড়ংঘাট ও মোহাম্মদপুর নগর) ছাদ করা হয়েছে। অন্য রেলস্টেশনের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। তবে ট্র্যাক নির্মাণ ও সিগন্যালিংয়ের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। (সূত্রঃ বাসস)