স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য কামাল প্রতাপ গ্রামের ৭৫ বয়সী বৃ*দ্ধ রাজ্জাক মল্লিক হ*ত্যাকা*ন্ডের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার (২৭ আগষ্ট) রাতে নিহ*তের ছোট ছেলে রফিকুল মল্লিক বাদী হয়ে ১৫জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন (মামলা নং-১৪)। এদিকে পুলিশ ঘটনার সাথে জ*ড়িত স*ন্দেহে দুজনকে আটক করে জেল হা*জতে প্রেরণ করেছে।
জানাগেছে, গত ২৪ আগষ্ট রাত ৮টার দিকে বৃ*দ্ধ রাজ্জাক মল্লিক বাড়ির পূর্বপোতার ঘরে কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া-কালাম পড়ছিলেন। এসময় দু*র্বৃ*ত্তরা রাজ্জাক মল্লিকের ঘাড়ে কু*পিয়ে নির্ম*মভাবে হ*ত্যা করে। ঘটনার সময় তার স্ত্রী হাসনা হেনা (৬৫) পার্শ্ববর্তী বাড়িতে পানি আনতে গিয়েছিলেন। ৮/১০ মিনিট পর বাড়িতে ফিরে এসে তার ৬ বছর বয়সী পুতা এশরাকের কাছ থেকে জানতে পারেন বৃ*দ্ধ স্বামীকে হ*ত্যা করা হয়েছে। এসময় স্ত্রীর চি*ৎকা*রে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে।
নিহ*তের স্ত্রী হাসনা হেনা (৬৫) বলেন, ‘গত ২৪ আগষ্ট ৮টার দিকে আমি বাড়ির দক্ষিণপাশে গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে টিউবয়েলে পানি আনতে যাই। পানি নিয়ে ফিরে আসতে ৮/১০ মিনিট সময় লাগে। পানি নিয়ে ফিরে আসার পর আমার পুতা এশরাক (৬) জানায়, তার দাদাকে কু*পি*য়ে মে*রে ফেল*ছে। তখন গিয়ে র*ক্তা*ক্ত অবস্থায় প*ড়ে থাকতে দেখি। এসময় আমি চিৎ*কার ও কা*ন্নাকা*টি করলে আশেপাশের বাড়ির লোকজন দৌড়ে আসে। আমার স্বামীকে মে-রে ফেলার পরও তিনি কোরআন শরীফটি বু*কে জ*ড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন। জায়নামায র*ক্তে ভিজে গিয়েছিলো। কয়েক মাস আগে আমাদের গ্রামে একটি মা*র্ডার হয়। ওই মা*র্ডার কে*সে আমার ছেলে রবিউলকে ষ*ড়য*ন্ত্রমূলক বিনা অ*পরা*ধে আসা*মী করা হয়। এছাড়া আমাদের বাড়িঘর প্রতিপ*ক্ষের লোকজন ভাং*চু*র ও লু*টপা*ট করার কারণে দুই ছেলে রবিউল ও রফিকুল লোহাগড়ায় বাসা ভাড়া করে থাকেন এবং ব্যবসা করেন। আমাদের বাড়িঘর যারা ভাং*চু*র করেছে তারাই আমার স্বামীকে মে*রে ফে*লেছে।’ আমি তাদের বিচার চাই।
নিহ*তের ছেলে মামলার বাদী রফিকুল মল্লিক দাবি করেন, ‘আমার ছেলে এশরাক (৬) আমার আব্বা হ*ত্যাকা*ন্ডে প্রত্যক্ষদর্শী। আমাদের এলাকার মানুষ কমবেশি সে চেনে। সে খু*নিদের চিনতে পেরেছে এবং আমাকে বলেছে। তবে এখনই আমি নাম বলবো না। আমাদের এলাকার তিনটি গ্রাম নিয়ে দ*লাদ*লি। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কাশেম খা এবং আমাদের আমাদের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন নাইস খা। আমার আব্বা দীর্ঘদিন ধরে সমাজে নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রতিপ*ক্ষরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হ*ত্যার হু*মকি-ধা*মকি দিচ্ছে। হয়তো আমাদের দুই ভাইকে মা*রার জন্য এসেছিলো। কিন্তু আমাদের না পেয়ে আব্বাকে মে*রেছে। আমরা ঘটনার সাথে জ*ড়িতদের আ*টকসহ উপযুক্ত শা*স্তি চাই বিচার চাই।’
অপর ছেলে রবিউল মল্লিক বলেন, ‘এক সময়ে সামাজিক দ*লাদ*লি এবং ইউনিয়নের মেম্বর ছিলেন। আমার আব্বার কাজকর্ম করার কোন স*ক্ষ*মতা এখন আর নেই। তিনি নামায-কালাম পড়ে আর কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করে সময় কা*টান। আমি এই গ্রামের শাফি মোল্যা হ*ত্যা মামলার আসা*মী। আমাকে বিনা কারনেই আসা*মী করা হয়েছিলো। এখন আমি লোহাগড়ায় ব্যবসা করি এবং বাসা ভাড়া করে থাকি। আমার আব্বাকে যারা হ*ত্যা করেছে তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরের দিন ২৫ আগষ্ট নিহ*তের ময়*নাত*দন্ত নড়াইল সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়। বাদ আসর কামাল প্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক ক*বর স্থানে দা*ফন করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নড়াইল সদর থানার ওসি (অপা*রেশন) শিমুল কুমার দাস জানান, হ*ত্যাকা*ন্ড সম্পর্কে জি*জ্ঞাসাবাদের জন্য নিহ*ত রাজ্জাক মল্লিকের ছেলে রবিউল মল্লিক, তাদের পক্ষীয় কামলা প্রতাপ গ্রামের রশিদ মল্লিকের ছেলে নাজমুল হোসেন ও আমাদা ওহিদার অহিদার খানের ছেলে নাইচ খানকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে নিহ*তের ছেলে রবিউল মল্লিককে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে হ*ত্যাকা*ন্ডে জ*ড়িত সন্দে*হে নাজমুল হোসেন ও নাইচ খানকে জিজ্ঞা*সাবাদের পর আদালতে সো*পর্দ করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইলিয়াছ হোসেন (পিপিএম) জানান, মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদ*ন্ত করা হচ্ছে। আশা করি হ*ত্যাকা*ন্ডের সাথে যারা জ*ড়িত আছে তাদেরকে গ্রে*ফতার করা হবে। এলাকায় পুলিশ মো*তা*য়েন রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।