স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে-যশোর সড়কের দু’পাশে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে লাগানো গাছ তুলারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ বুলবুল আহম্মেদের বিরু*দ্ধে গাছ কা*টার অভিযো*গ পাওয়া গেছে। কখনো দিনে কখনো রাতে, কখনো ভু*য়া টেন্ডার দেখিয়ে। সর্বক্ষেত্রেই ব*ঞ্চিত হচ্ছেন গাছের প্রকৃত মালিক ও উপকারভো*গীরা। স্থানীয় প্রশাসন আর বনবিভাগের যো*গসা*জসে সড়কের পাশের কোটি টাকার গাছ নামমাত্র মূল্য দেখিয়ে অর্থ আ*ত্মসাৎ করা হচ্ছে।
তুলারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে তুলারামপুর মাইজপাড়া সড়কের সাড়ে ৫ কিলোমিটার অংশে ১ হাজার গাছ রোপন করা হয়। এলজিইডি, ইউনিয়ন পরিষদ, কেয়ার বাংলাদেশের পক্ষে গণ সাহায্য সংস্থা এবং উপকারভো*গীদের নিয়ে একটি চুক্তিনামা করা হয়। ওই চুক্তিতে ইউনিয়ন পরিষদ ৪০ ভাগ, উপকারভো*গী ও জায়গার মালিক ৫০ ভাগ এবং এনজিও পাবে ১০ ভাগ।
এ চুক্তি সামাজিক বনায়নের নিয়ম বহির্ভূ*ত হলেও চুক্তিতে থাকা এনজিও ও উপকারভো*গীদের কোন তথ্য না দিয়েই চেয়ারম্যান নিজের খেয়া*লখুশী মতো অর্থ লোপা*টের আশায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই গাছ কা*টা শুরু করেন। ২২বছরে প্রতিটি গাছের মূল্য ২০থেকে ৫০হাজার হলেও বনবিভাগ গড়ে দাম ধরেছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
এ মূল্যে হতবা*ক গাছ সংরক্ষণকারী, যাদের গাছ বিক্রির ৫৫ ভাগ টাকা পাবার কথা। এদিকে রাস্তার জমির মালিকানা রাজস্ব বিভাগের বলে দাবী করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ কা*টা ব*ন্ধ করে দেয়া হয়। চুক্তি এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বেআ*ইনী দাবী জেলা প্রশাসনের। অভিযোগ আছে নানা প্রক্রিয়ায় গাছের কম মূল্য নির্ধারণ করে ইউপি চেয়ারম্যানকে অর্থ লোপা*টের সুযোগ করে দিয়েছে স্থানীয় বন বিভাগ। এ হিসেব ওই বিভাগের কর্মকর্তারা ও অর্থিক লাভবান হয়েছেন। কম মূল্য ধরে চেয়ারম্যানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন তারা।
স্থানীয়রা জানায়, সড়কের পাশে থাকা প্রায় ৫’শ টি বড় মেহগনি, কড়াই, শিশু গাছের প্রতিটির মূল্য ২০ থেকে ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত হবে। এ হিসেবে ২৫হাজার টাকা গড় মূল্য ধরলে গাছের দাম পড়ে প্রায় কোটি টাকার মত। অথচ বনবিভাগের সঙ্গে যো*গসাজ*সে ৩৭১টি গাছের মোট দাম ধরা হয়েছে ১৩ লক্ষ ৬৩ হাজার গড়ে প্রতিটি সাড়ে ৩হাজার টাকা। মাস খানেক আগে ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ বাক্সে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
এ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদ বলেন, ‘সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে।’ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম বলেন, ‘এলজিইডির একটি চুক্তির ভিত্তিতে বনবিভাগের সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে সভা হয়েছে। কিন্তু জেলা পর্যায়ে সভা হয়নি। তবে চেয়ারম্যান আমাকে না জানিয়েই টেন্ডার করেছেন। এখন ডিসি স্যার যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাই হবে।’
নড়াইল বন বিভাগের ফরেস্টার এস কে আব্দুর রশীদ এসব অভিযো*গ অ*স্বীকার করে বলেন, ‘মানুষ বন বিভাগের নাম শুনলেই কেমন করে ওঠে। কিন্তু আমরা যে ধরনের গাছ পেয়েছি সে মূল্য ধরেছি। বাজারের দামের চেয়ে সরকারী মূল্য অনেক কম, তাই কম ধরা হয়েছে।’
এ বিষয় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা জানান, ‘এ অভিযোগ আসার পরে গাছ কা*টা বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়কের পাশের ওই জায়গা জেলা প্রশাসনের। সুতরাং জমির মালিককে বা*দ দিয়ে কোন চুক্তি হতে পারে না।’