মীর আব্দুল গণি, জার্মানি প্রবাসী
আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি ব্যক্তির উৎস প্রতিটি পরিবার তাদের জীব’ন-সম্পৃক্ত তাগিদ সৃষ্ট বোধ-চেতনা উৎসারিত আ’চরণে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এবং ব্যক্তি ক্রমান্বয়ে তার পারিবারিক স্বকীয় আ’চরণেই নিজেকে বিকাশিত ও প্রকাশ করা শিখে থাকে। ফলে প্রতিটি ব্যক্তির বো’ধ-চেত’নার উন্মেষ তার পরিবারভিত্তিক তথা মা’নবিক ও নৈতিক মূল্যবো’ধে ভিন্ন ভিন্ন মা’নসম্পন্ন আ’চরণে আ’চরণশীল হয়ে থাকে এবং হওয়াই অতি স্বাভাবিক।
(যে স্বকীয়তা পরিবেশগত, পেশাগত বা সমাজের স্তর বিন্যাসের অবস্থানগত কারণে হয়ে থাকে- যা মোটেই দো’ষের নয়।) অতএব পরিবারসমূহের স্বকীয়তার কারণে ব্যক্তির আ’চরণজাত মূল্যবো’ধসমূহে যে মান বৈষ’ম্য সৃষ্টি হয় সেই মান বৈষ’ম্য অবশ্যই বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাদানে পরিবার পরিমণ্ডলের সক্ষ’মতা যাচাই করতে হবে।
শিক্ষাদানে পরিবারের সক্ষ’মতা বুঝতে সহজ হবে যদি পরিবারসমূহে উন্মেষিত পারিবারিক মূল্যবো’ধসম্পন্ন আচ’রণের সম্ভাব্য মা’ন বৈ’ষম্যের পার্থক্য একটি উপমার সাহায্যে তুলে ধরা হয়। (বর্তমান উপমাটির জন্য আমরা অবশ্য পরিবারের উন্মেষিত বিষয়গত সম্পাদন সক্ষ’মতার মা’ন বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হতে বির’ত থাকব। কারণ পরিবারে অর্জিত ব্যক্তির অনেক বিষয়গত সম্পাদন সক্ষ’মতার মা’ন রা’ষ্ট্র যেমন স্বীকৃতি দেয় না। তেমিন সকল পরিবার এইক বিষয়ে বা সকল বিষয়ে একই পরিবারের সম্পাদন
সক্ষ’মতা অর্জনের সুযোগ ও প্রয়োজনীয়তাও থাকে না।)
উপমার জন্য আমরা ব্যক্তি আচ’রণে সমাজ রাষ্ট্রে কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’মতার মানবিক ও নৈতিক মূল্যবো’ধসমূহের শুধু কয়েকটি মাত্র উল্লেখ করব।
মনে করি ব্যক্তি আচরণে রাষ্ট্রের কাঙ্খিত মূল্যবো’ধসমূহ যেমন- ১. মানবিকতা, ২. নীতিনৈতিকতা, ৩. সততা, ৪. নিষ্ঠা, ৫. যুক্তিবাদিতা, ৬. দায়িত্ববোধ, ৭. কর্তব্যপরায়ণতা ইত্যাদি।
মনে করি ন্যূ’নতম উক্ত রূপ ৭টি মূল্যবো’ধসম্পন্ন আচ’রণশীলতা কোনো ব্যক্তি অর্জন করলে সে রাষ্ট্রের কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম রূপে বিবেচিত হবেন। এখন আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে অবস্থিত কয়েকটি পরিবারে ব্যক্তির পরিবার-ভিত্তিক অর্জিত আচ’রণে উক্ত মূল্যবো’ধসমূহের কতটি কার আচ’রণে পরিলক্ষিত হয় তা নির্ণয় বা জানার চেষ্টা করি। (প্রত্যেকের প্রাপ্ত সংখ্যা হবে তার পরিবারভিত্তিক।) উক্ত ক্ষেত্রে একজনের প্রাপ্ত সংখ্যার সঙ্গে অপর জনের প্রাপ্ত সংখ্যার যে পার্থক্য সেটাই হবে তাদের পরিবারভিত্তিক আচরণের মূল্যবো’ধসমূহের মা’ন পার্থক্য বা ভিন্নতা। উপমা
বাস্তব প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন কারণে সকল পরিবারের আচ’রণ সক্ষম’তার মান সমপর্যায়ে বা একই রূপ মূল্যবো”ধসম্পন্ন হবে এমন সম্ভাবনা কখনই প্রত্যাশা করা যায় না। অর্থাৎ তারা স্ব স্ব পরিবারে উক্ত রূপ মূল্যবো’ধসম্পন্ন আচ’রণ সক্ষ’মতা অর্জনে সক্ষ’ম হয়েছে।
উপরিউক্ত উপমায় প্রতিয়মান হয় ব্যক্তির উৎস পরিবার, ব্যক্তিসত্তাকে তার পরিবারভিত্তিক আচ’রণ সক্ষ’ম করে তোলে। (বিভিন্ন কারণে পরিবারের আচ’রণ সক্ষ’মতার মা’ন ভি’ন্নতা যতই হোক তা মোটেই দো’ষের নয়। কিঞ্চিৎ ব্যতিক্রম ঘ’টতে পারে উপমাতে যেমন- রহিম কিন্তু সেটা কোনো জাতীয় বা সর্বজনীন মা’ন হতে পারে না।
উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, যে সকল মূল্যবো’ধসম্পন্ন আচ’রণ সক্ষ’মতা অর্জন করলে সমাজ রাষ্ট্রের কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষম রূপে ব্যক্তি বিবেচ্য হবেন সেই সকল মূল্যবো’ধসমূহ ব্যক্তির বো’ধ-চে’তনায় পরিবার উন্মেষ ঘ’টাতে সক্ষ’ম নয়। অর্থাৎ পরিবারের উন্মেষিত বো’ধ-চেতনা ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম করে তুলতে পারে না। অতএব, আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, রাষ্ট্রের সুবৃহৎ আঙ্গিকে ব্যক্তিকে বিষয়গত সম্পাদন সক্ষমতা ও নীতিগত আচর’ণ সক্ষ’মতা
রাষ্ট্রের কাঙ্খিত পর্যায়ে শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পরিবারের এরূপ ধারণা পোষণ করা ঠিক নয়। কারণ বাস্তব প্রেক্ষাপটে দেখা যায় রাষ্ট্রের আকা’ঙ্খা পরিবার অনুধাবনে অক্ষ’ম।
উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতিয়মান হয় যে, রাষ্ট্রের সুবৃহৎ আঙ্গিকে ব্যক্তিকে বিষয়গত সম্পাদন সক্ষ’মতা ও নীতিগত আচ’রণ সক্ষ’মতা “রাষ্ট্রের কাঙ্খিত পর্যায়ে” রাষ্ট্রকেই শিক্ষা দিতে হবে। আলোচনায় “রাষ্ট্রের কাঙ্খিত পর্যায়” ব্যক্ত হওয়াতে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়।
যেমন- বিষয়গত সম্পাদন সক্ষ’মতা ও নীতিগত আচরণ সক্ষ’মতা রাষ্ট্রের কাঙ্খিত পর্যায়ে হতে হবে রাষ্ট্র ব্যক্ত করে কেন? রাষ্ট্রের আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করার কারণ অন্বেষণ করলে দেখা যায় দুটি কারণ রয়েছে। যথা- ১. রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তা’গিদ। ২. ব্যক্তির উৎস পরিবার।
রাষ্ট্রের আ’কাঙ্খা ব্যক্ত করার উক্ত দুটি কারণ বুঝতে হলে রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ ও তার গুরুত্ব কী আমাদের তা জানতে হবে। (রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহের শিক্ষাদানে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে নতুবা ব্যক্তির শিক্ষা অপূর্ণ থেকে যাবে।)
১. রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলের স্বকীয়তা বা নিজস্ব কিছুবৈশিষ্ট্য রয়েছে। বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের কারণেই রাষ্ট্র তার আ’কাঙ্খা ব্যক্ত করে থাকে। রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ ও তার গুরুত্ব আমরা উপমার সাহায্যে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
উপমাঃ মনে করি বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ একটি বাড়ি। (বাড়িটিতে বসবাস করতে হলে বসতিদেরকে বাড়িটির কাঙ্খিত পর্যায়ে আচ’রণ সক্ষ’ম হতে হবে।) মনে করি, বাড়িটিতে ৩ জন ব্যক্তি যৌথভাবে বসবাস করতে পারে। উক্ত বাড়িটিতে রয়েছে রান্নাঘর, শৌ’চাগার ও প্রাসঙ্গিক সুবিধা। বস’তিদের জী’বনধা’রণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রি সংগ্রহ বা ক্রয় করার জন্য বেশ কয়েক মাইল পথ অতিক্রম করতে হয়। (সত্তার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিচরণশীল ক্ষেত্রকে আমরা সত্তার বিচরণ ক্ষেত্র বলে উল্লেখ করব।) তাদের চলাচলের পথে কোথাও রয়েছে গ্রাম, নদী ও শহর। উক্ত বাড়িটিতে যে ৩ জন ব্যক্তি বসবাস করবে তাদের নিশ্চিত নিরা’পদ ও পরি’চ্ছন্ন জী’বনযাপ’নের জন্য প্রত্যেককেই যেসকল বিষয়সমূহে অবশ্যই আচ’রণ সক্ষ’ম হতে হবে আমরা সেসকল বিষয়সমূহ নিম্নে পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করি।
যেমন-
(ক) একই বাড়িতে যৌথভাবে বসবাস করার সমঝো’তাপূর্ণ মা’নসিকতা থাকতে হবে।
(খ) বাড়িঘর ও রান্নাঘর ব্যবহার ও পরিচ্ছ’ন্ন রাখা।
(গ) গো’সলখা’না ও শৌচাগার সঠিকভাবে ব্যবহার ও পরিচ্ছ’ন্ন রাখা।
(ঘ) শহরে পথ চলার নিয়ম জানা।
(ঙ) নদীপথে চলার জন্য সাঁতার জানা।
উপমায় উল্লিখিত বাড়িটির স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগত দিক লক্ষ্য করলে দেখা যায়- উপরিউক্ত বিষয়সমূহ ক হতে ঙ হলো বাড়িটির স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। উক্তরূপ বৈশিষ্ট্যের কারণেই ক হতে ঙ বিষয়সমূহ হলো বাড়িটির বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ। বাড়িটির বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের সকল বিষয়সমূহের অবস্থানগত গুরুত্ব পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় উক্ত বিষয়সমূহে বস’তিগণ আচ’রণ সক্ষম না হলে বাড়িটিতে বসবাস বা তাদের জী’বনযা’পন পরিচ্ছ’ন্ন ও নিরা’পদ নয় বা বস’তিদের কেউ কোনো বিষয়ে কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম না হলে পরিচ্ছ’ন্ন ও নিরাপদ জী’বনযা’পন বি’ঘ্নিত হয়।
উক্ত বাড়িটিতে বস’তিদের অস্তিত্বের নিশ্চ’য়তা বিধা’ন ও পরিচ্ছ’ন্ন জীব’নযাপ’নের জন্যই বাড়িটি তার কাঙ্খিত পর্যায় অর্থাৎ ক হতে ঙ বিষয়সমূহে আচর’ণ সক্ষম হতে হবে আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করে। (অনুরূপ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগি’দের বিষয়সমূহের শিক্ষাদানে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে নতুবা ব্যক্তির শিক্ষা অপূ’র্ণ থেকে যাবে।) উপরিউক্ত আলোচনায় (বাড়িটির) পরিমণ্ডলের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ কী এবং কেন আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করা হয় তা তু’লে ধ’রা হয়েছে।
২. ব্যক্তির উৎস পরিবার
ব্যক্তির উৎস পরিবারের কারণে রাষ্ট্র কেন আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করে বুঝতে সহজ হবে যদি আমরা রাষ্ট্রের পরিমণ্ডলভুক্ত জনসমষ্টির আচরণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করি। আমরা জানি রাষ্ট্র মূলত বহু সংখ্য পরিবারের সমষ্টি নিয়ে গঠিত হয় এবং ব্যক্তিরউৎস পরিবার। ব্যক্তির আচ’রণের উৎস তার বো’ধ-চেত’নার উন্মেষ তার পরিবারেই শুরু হয়। কিন্তু সকল পরিবার ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম করে তুলতে অক্ষ’ম।
অর্থাৎ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহে আচরণ সক্ষ’ম করে তুলতে পরিবার পারে না।
একটি উপমা ছকের সাহায্যে পরিবারের অক্ষ’মতা আমরা তু’লে ধর’তে পারি। উপমাঃ আমাদের উল্লেখিত বাড়িটির বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ হলো ক হতে ঙ।
মনে করি উক্ত বাড়িটিতে ভিন্ন ভিন্ন পরিবার ও পরিবেশ থেকে আগত- রহিম, করিম ও যদু ৩ জনকে বসবাস করতে দেওয়া হলো। তারা ৩ জন বাড়িটির বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের ক হতে ঙ যে যে বিষয় বা বিষয়সমূহে আচ’রণ সক্ষ’ম সেটি বা সেই কয়টি তার নামের পাশে একটি ছকে নিম্নরূপে উল্লেখ করা হলো-
উপরিউক্ত উপমা লক্ষ করলে দেখা যায়- রহিম ১টি বিষয়ে, করিম ৪টি বিষয়ে এবং যদু ৩টি বিষয়ে আচ’রণে অক্ষ’ম। (বাস্তব প্রেক্ষাপটে পরিবারসমূহে উক্ত বিষয়সমূহে কাঙ্খিত পর্যায়ে সবাইকে আচ’রণে সক্ষ’ম পাওয়া সম্ভব কী? সম্ভব নয়।) ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে হলেও মূলত তারা সকলেই অনেকগুলো বিষয়ে আচ’রণে অক্ষ’ম। ফলে উক্ত বাড়িটির বস’তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায়-
নদীপথে চলতে নৌকা বা জাহাজ ডু’বলে রহিম, শহরে পথ চলতে যদু ও মধু এবং ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে হলেও উক্ত বাড়িটিতে সবার জীবন হবে বিপ’ন্ন। (উপমাটিতে দেখা যায় বাস্তব প্রেক্ষাপটে পরিবার ব্যক্তিকে বাড়ীটির কাঙ্খিত পর্যায়ে আচরণ সক্ষম করে তুলতে পারে না।)
কিন্তু সমষ্টির জীব’নযা’পন ও তাদের অস্তিত্বের নিশ্চ’য়তা বিধানের জন্য বাড়িটির বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ ’ক থেকে ঙ’ অগ্রা’হ্য করা সম্ভব কী? অগ্রা’হ্য করা সম্ভব নয়। উক্ত কারণেই বস’তিদের কাছে বাড়িটি যেমন তার বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহে (কাঙ্খিত) আচ’রণ সক্ষ’ম হতে হবে ব্যক্ত করে। তেমনি ব্যক্তির বিরা’জিত পরিমন্ডলের তথা রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তা’গিদের গুরুত্ব অনুধাবনে পরিবারের অক্ষমতার কারণেই রাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলে ব্যক্তি সমষ্টির সার্বিক কল্যাণ, উন্নত জী’বনযা’পন ও অস্তিত্বের নিশ্চয়তা বিধানের জন্যই রাষ্ট্রও তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহে আচ’রণ সক্ষ’মতার আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করে থাকে।
উপরিউক্ত আলোচনায় রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের গুরুত্ব এবং কেন আকা’ঙ্খা ব্যক্ত করে বাড়ীটির উপমাতে তা তু’লে ধ’রা হয়েছে। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতিয়মান হয়, রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগি’দের বিষয়সমূহের শিক্ষা যেহেতু ব্যক্তির অস্তিত্বের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করে সেহেতু রাষ্ট্রের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহে সকল ব্যক্তিকে অবশ্যই শিক্ষা গ্রহণ করা এবং সবাইকে অবশ্যই শিক্ষাদানের অনিবার্যতা তুলে ধরে।
রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহের শিক্ষার উক্তরূপ গুরুত্বের কারণেই- উক্ত বিষয়সমূহের শিক্ষাকে আমরা ব্যক্তি তথা সকল নাগরিকের মৌলিক শিক্ষার বিষয়রূপে আখ্যায়িত করব। শিক্ষা ও শিক্ষাদানের প্রয়োজনীয়তা ও শিক্ষার বিষয় কী হবে তা বিবেচনায় নিলে সর্বপ্রথম বিবেচনায় নিতে হবে- সমাজ-রাষ্ট্রের বেশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহ তথা ব্যক্তির মৌলিক শিক্ষার বিষয়সমূহকে।
অর্থাৎ কিছু বিষয় আছে যে বিষয়সমূহ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদ যা সবাইকে বা’ধ্যতামূলক শিক্ষা দিতে হয় এবং সবাইকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। (মৌলিক শিক্ষার বিষয়সমূহ মূলত সকল নাগরিকের তথা সর্বজনীন শিক্ষার বিষয়।)
আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি- শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য হলো- ব্যক্তিকে কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম করে তোলা। অতএব ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের কাঙ্খিত আচ’রণ সক্ষ’ম করে তুলতে হলে- শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য হতে হবে একটা নির্দিষ্ট শিক্ষাদান পর্যায়ের মধ্যে (রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহে) ব্যক্তির মৌলিক শিক্ষার বিষয়সমূহে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদান করা।
উক্ত ক্ষেত্রে অবশ্য প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক- রাষ্ট্রের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যগত সৃষ্ট তাগিদের বিষয়সমূহ জানার উপায় কী? অথবা, উল্লেখ করা যায়- রাষ্ট্রের ন্যায় সুবৃহৎ পরিমণ্ডলে ব্যক্তির মৌলিক শিক্ষার বিষয়সমূহ নির্ধারণের উপায় (পদ্ধতি) কী? (চলবে…) পূর্ব লেখাঃ
গঠনমূলক আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থাঃ ব্যক্তিকে শিক্ষাদান করবে কে? পরিবার, না রাষ্ট্র?