নড়াইলে হাসপাতালের ৭০ লাখ টাকা আ/ত্মসাতের ঘটনার নতুন মোড়!

2
34
শিশুর মৃ'ত্যু
নড়াইল সদর হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইল সদর হাসপাতালের ইউজার ফি-এর ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দেওয়ার ঘটনায় হিসাব রক্ষক দোষ চাপাচ্ছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের ওপর। হিসাব রক্ষক বলছেন, তার কাছে ৩ মাসের ইউজার ফি-এর টাকা রয়েছে। এই টাকা ১ সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেবেন। বাকি অর্থ তত্ত্বাবধায়ক কাকে দিয়ে ব্যাংকে পাঠিয়েছেন তা তিনি জানেন না। এদিকে টাকা আ/ত্মসাতের ঘটনা বৃহস্পতিবার কয়েকটি মিডিয়ায় প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (৮এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশসাক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা তত্ত্বাবধায়কের জানতে চান কেন এতোদিন টাকার বিষয়টি খোঁজ-খবর নেননি। এদিকে এ বিষয়টি তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আকরাম হোসাইনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামি ৭ দিনের মধ্যে এ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালের হিসাব রক্ষককে স্টেশন ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং তার দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাহান আরা খানম লাকি ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই নড়াইল সদর হাসপাতালে হিসাব রক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের রোগি ভর্তি ফি, ওটি চার্জ,চিকিৎসা ফি,প্যাথলজি,অ্যাম্বুলেন্স, কেবিন ফিসহ বিভিন্ন খাতের প্রতি মাসে একবার করে সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখায় জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। ২১ মাসের ৭০ লক্ষাধিক টাকা আ/ত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। হিসাব রক্ষকের কাছে ব্যাংকে অর্থ জমা দেওয়ার যে চালান রয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছেন এসব চালান জাল।

অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকি এ প্রতিনিধিকে বলেন, তার কাছে ৩ মাসের ইউজার ফি-এর (কত টাকা তা বলতে পারেননি) টাকা রয়েছে। করোনার কারণে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেব। বাকি টাকার হিসাব তত্ত্বাবধায়ক বলতে পারবেন। কারণ চালানে তত্ত্বাবধায়কের স্বাক্ষর থাকে। তিনি অন্য কাকে দিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়েছেন তা তিনিই জানেন। এর দায়ভার তত্ত্বাবধায়কের।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর শাকুর বলেন, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার চালানে জমাদানকারী হিসেবে হিসাব রক্ষকের স্বাক্ষর থাকে। এছাড়া হিসাব রক্ষকের কাছেই চালান জমা থাকে। সব দায়-দায়িত্ব তারই। আমিই যদি অর্থ আ/ত্মসাত করবো তাহলে কেন নিজে সোনালী ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দেওয়া হচ্ছে কিনা সে খোঁজ-খবর করবো। এখন সিহাব রক্ষক নিজে বাঁচার জন্য এসব কথা বলছে।

নড়াইল সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার ম্যানেজার মোঃ আবু সেলিম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (৬এপ্রিল) যেসব ব্যাংক চালান নিয়ে এসেছিলেন তার সিল ও স্বাক্ষর জাল।

প্রসঙ্গত, সদর হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত একইভাবে হাসপাতালের ইউজার ফি ব্যাংকে জমা না দিয়ে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আ/ত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। মামলাটি এখন দুদক যশোর কার্যালয়ে বিচারাধীন।