স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের চাঁনপুর গ্রামে রাম প্রসাদ নামে এক ব্যক্তিকে মারধর ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ১লাখ টাকা, চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনায় মানববন্ধনের পরিবর্তে আইন শৃংখলার মিটিং হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী ৩ দিন আগে মানববন্ধনের অঅয়োজন করলেও পুলিশ কৌশলে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সাথে নিয়ে মানববন্ধনের পরিবর্তে আইন শৃংখলা মিটিং করেছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়নপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় সমাজসেবক জাহাঙ্গীর ভূইয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ সোহরাব হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা, এডিশনাল এসপি (হেডকোয়ার্টার) কামরুজ্জামান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, সদর থানার ওসি শওকত কবির, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন পান্না, সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাচ্চু, ভূক্তভোগি রাম প্রসাদ, গৌরি বালা, অর্জুন বিশ্বাস, কবিতা সিংহ প্রমুখ।
স্থানীয় ভূক্তভোগিরা অভিযোগে জানান, আসামিরা গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছে। মাঠে ও বিলে ছাগল-গরু বাঁধতে গেলে বাঁধা দেওয়া হয়, বাড়ির মেয়েরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে না। বাড়ি থেকে বের হলে এসব সন্ত্রা/সী ও বখা/টেরা কয়েকবার শ্লী/লতাহানীর চেষ্টা করেছে।
এামলার বিবরণ এবং গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁনপুর গ্রামের সন্ত্রা/সী ইমরুল (৪০) ও বিষ্ণুপুর গ্রামের টিটুল (৩২) সকালে সদরের চাঁনপুর গ্রামের মৃত জগিন্দির সিংহ-এর পূত্র রাম প্রসাদকে (৫৩) জোরপূর্বক তার বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী মোস্তফা কামাল মোস্তর খামারে ধরে এনে বেদম মা/রপিট করে এবং স্ত্রী হাসির কাছে মোবাইল করিয়ে অগ্রনী ব্যাংকের চেক বই আনিয়ে নেয়। পরে পার্শ্ববর্তী জুড়–লিয়া গ্রামের হালিম কবিরাজ (৩৫) ও বিষ্ণুপুর গ্রামের বুলবুল (২৮) জোরপূর্বক রাম প্রসাদকে মোটরসাইকেলে অগ্রনী ব্যাংক রূপগঞ্জ শাখায় নিয়ে আসে। পরে তাকে দিয়েই ৪৩৫৩৮৪৬ নম্বর চেকে স্বাক্ষর করিয়ে ১লাখ টাকা উত্তোলন করায় এবং জোরপূর্বক আরেকটি চেকের পাতা (চেক নম্বর ৪৩৫৩৮৪৭) নিয়ে নেয়। পরে তাকে আদালত চত্বরের মাসুদুরের দোকান থেকে রাম প্রসাদের নামে ৩শ৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ক্রয় করে (যার বইয়ের ক্রমিক নম্বর ২৭০৬ এবং স্ট্যাম্পের নম্বর ০৮১৮৪০৮, ০৮১৮৪০৯, ০৮১৮৪১০ ও ৩৬৮৭১০১) তাকে মোস্তর খামারে নিয়ে ওই স্ট্যাম্পগুলিতে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়।
এসব কথা কাওকে জানানে তাকে ও তার পরিবারের সকলকে খুন করার হু/মকি দিয়ে স/ন্ত্রাসীরা তাকে ছেড়ে দেয়। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সদর থানায় এ ঘটনায় রাম প্রসাদ বাদি হয়ে নড়াইল পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোস্তফা কামাল মোস্ত, হালিম, ইমরুল ও টুটুলের বিরু/দ্ধে মামলা দায়ের (মামলা নং-১৬)।
নড়াইল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সহকারী অধ্যাপক মলয় নন্দী জানান, আমরা চাঁনপুরে গ্রামবাসির আহবানে গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম পুলিশ সুকৌশলে মানববন্ধন করতে না দিয়ে আইন শৃংখলা মিটিং করে সাধারন মানুষের আন্দোলন দমিয়ে দিল। এভাবে তাদের কন্ঠরোধ করাটা আদৌ ঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে মোস্তফা কামাল মোস্ত এ প্রতিনিধিকে বলেন, স্থানীয় ৪ সন্ত্রা/সী রাম প্রসাদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ও স্ট্যাম্প নিয়েছে এটা শুনেছি। জড়িতরা সাজা পাক সেটা আমি চাই। তবে এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এছাড়া রাম প্রসাদের সাথে আমার সম্পর্কের কখনও অবনতি হয়নি। স্থানীয় রাজনৈতিক কারণে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি শওকত কবির জানান, গ্রামবাসীর ইচ্ছায় সেখানে আইন শৃংখলা মিটিং হয়েছে। এটি তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান।