শিল্পীর ‘স্নানরত কলসি কাঁখে নারী’ ও ‘কাজিয়া’ ছবি দু’টি মেরামত জরুরি
শামীমূল ইসলাম
প্রায় ১ বছর পর শিল্পী সুলতানের ৩টি ছবি সুলতান কমপ্লেক্সে ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমে ঢাকায় মেরামত ও সংস্কার করতে নেওয়া ২টি ড্রইং ও ১টি পেইন্টিং ছবি ছবি ‘ফসল সংগ্রহ’, ‘মাছ শিকার ও ‘জমি তৈরি’ শিল্পকলা একাডেমীর একটি টিম শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সুলতান কমপ্লেক্সে প্রতিস্থাপন করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম, এনডিসি জাহিদুল ইসলাম, জেলা কালচারাল অফিসার ও সুলতান কমপ্লেক্সের কিউরেটর হায়দার আলী, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর বিদায়ী সাধারন সম্পাদক মলয় কুন্ডু, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কর্মকর্তা শেখ হানিফ প্রমুখ। এদিকে শিল্পীর জীবনের শেষ মুহূর্তে আঁকা অসমাপ্ত দু’টি ছবি ‘স্নানরত কলসি কাঁখে নারী’ ও ‘কাজিয়া (কাইজ্যা)’ ছবি মেরামতের জন্য জরুরি হলেও এখনই তা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমের নেতৃতে ৮ সদস্যের একটি টিম নড়াইলে এসে শিল্পীর নষ্ট হয়ে যাওয়া ৩টি ছবি‘জমি কর্ষণ’, ‘ধান মাড়াই’ এবং ‘চর দখল’ সুলতান কমপ্লেক্সে প্রতিস্থাপন করে আরও ৩টি ছবি ‘ফসল সংগ্রহ’, ‘মাছ শিকার ও ‘জমি তৈরি মেরামতের জন্য ঢাকায় নিয়ে যান। প্রায় ১ বছর পর তারই নেতৃত্বে দুই সদস্যেও একটি টিম শুক্রবার (২১ জানুয়ারী’২০২২) এ তিনিটি ছবি রিপিয়ার করে এনে তা প্রতিস্থাপন করে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলো।
জানা যায়, ১৯৯৪ সালে শিল্পীর মৃত্যুর ৯বছর পর ২০০৩ সালে শহরের কুরিগ্রামে সুলতান কমপ্লেক্স তৈরী হলেও ২০১১সাল থেকেই মূলত শিল্পীর শিল্পকর্মগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয় । এতদিন ছবিগুলি দড়ি বা পিন দিয়ে ঝোলানো হয়েছে। এছাড়া অপরিকল্পিত গ্যালারি, উপযুক্ত আবহাওয়া, আলো-বাতাস, প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক ফ্যান ও এসি না থাকা, উপযুক্ত স্থানে ছবি স্থাপন না করা ইত্যাদি কারণে মূল্যবান এ ছবিগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সুলতান কমপ্লেক্সে শিল্পীর মোট ২২টি ছবি থাকলেও অধিকাংশ ছবি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এগুলো মেরামতের প্রয়োজন পড়ছে। এ পর্য়ন্ত ৬টি ছবি রিপিয়ার করা হয়েছে এবং সুলতানের সবচেয়ে বৃহৎ এবং বিখ্যাত ৩৬ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা এবং ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি চওড়া চিত্রকর্ম ‘সভ্যতার ক্রমবিকাশ’ ছবিটি বিভিন্ন ধাপে ধাপে রিপিয়ার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম জানান, শিল্পীর নষ্ট হওয়া ‘স্নানরত কলসি কাঁখে নারী’ ও ‘কাজিয়া (কাইজ্যা)’ দু’টি ছবি এই মুহূর্তে নেওয়া হচ্ছে না। তবে শিল্পকলা একাডেমীর নিদের্শনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে এসব ছবি রিপিয়ারের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সুলতান কমপ্লেক্সের জন্য একটি আধুনিক পরিবেশসম্মত গ্যালারীর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে যে গ্যালারীতে শিল্পীর ছবি রাখা হয়েছে এখানে অনেক সমস্যা রয়েছে। তবে ছোট ছোট সমস্যা যাতে ঠিক করা যায় সে জন্য জেলা প্রশাসন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমীকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসএম সুলতান কমপ্লেক্সের কিউরেটর ও জেলা কালচারাল অফিসার হায়দার আলী বলেন, নষ্ট হয়ে যাওয়া বাকি ছবিগুলি রিপিয়ারের জন্য জেলা শিল্পকলা একাডেমী একটি প্রস্তাবনা দিবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পর্যায়ক্রমে ছবি মেরামতের ব্যবস্থা করবে।