স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের মুলিয়া ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের খোকন মল্লিকের ৭৮ শতক জমি জো/র করে লিখে নিয়ে গু/ম করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শহরের কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দাহার পরিবারের জামাতা সালামের বিরুদ্ধে। খুলনার ছালাম নড়াইল দাহার পরিবারে বিবাহ করে শহরের কুড়িগ্রামে বর্তমানে বসবাস করেন।
জানা গেছে দেড় মাস আগে যে জমি খোকন মল্লিক জ্যাঠাতো ভাই অনুপ মল্লিকের কাছে বিক্রি করেছেন। সেই জমিই ছালাম ক্রয় করেছেন বলে দাবি করছেন। এ বিষয় নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ বিষয়ে গতকাল রাতে সাতঘরিয়া গ্রামবাসীরা সালিশ করেছেন। সালিশের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে খোকন মল্লিক কোথায় আছে সেটা সালাম ও তার জমি কেনাবেচার দালালরা জানে। তারা খোকন মল্লিককে হাজির করে দিবে, না দিতে পারলে প্রমাণিত হবে তারা তাকে গু/ম করেছে অথবা হ/ত্যা করেছে।
জানা গেছে খোকন মল্লিকের তিন সন্তান ভারতে বসবাস করেন। বিধায় খোকন মল্লিক তার জেঠাতো ভাই অনুপ মল্লিকদের বাড়িতেই থাকেন। সালিসে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান রবিন অধিকারীর ছেলে শেখর অধিকারী,ওই ওয়ার্ডেও ইউপি সদস্য নীলকান্ত মহন্ত, নিশিকান্ত মহন্ত, টোকন মল্লিক, প্রদ্যুৎ রায়,পলাশ মল্লিক,রমেশ মল্লিক, সঞ্জীদ বাগচি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সালিশ শেষে করে শেখর অধিকারী বলেন,এদেশ থেকে ভিটামাটি বিক্রি করে ভারতে কারো যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তার পরও যদি কেউ যেতে চায় সম্পত্তি শরীকদের দেওয়ার অনুরোধ করেন। অন্য জাতি বা অন্য কাউকে এনে এলাকায় ঝামেলা অশান্তি সৃষ্টি না করতে অনুরোধ করেন।
খোকন মল্লিকের জেঠাতো ভাই মুলিয়া বাজারের শোভা স্টুডিওর মালিক অনুপ মল্লিক বলেন,আমার জেঠাতো ভাই খোকন মল্লিকের ছেলেমেয়েরা ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সেহেতু তিনার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আমাদের বাড়িতেই করি। তার নামের পশ্চিম সাতঘরিয়া মৌজার ১২ নং খতিয়ানের কয়েকটি দাগের ৭৮শতক জমি বিক্রি করার ইচ্ছা পোষণ করলে গ্রামের ইউপি সদস্য নীলকান্ত মহন্ত সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের মাধ্যমে আমার অন্য একটি জমি বিক্রি করে ১২ লক্ষ টাকা খোকন মল্লিকের কাছে দেই। সিদ্ধান্ত হয় যেদিন জমি রেজিস্ট্রি করে দিবেন সেদিন বাকি টাকা দেওয়া হবে। তিনি অসুস্থ হওয়ায় রেজিস্ট্রি করতে বিলম্ব হয়। তিনি ছেলের শশুর বাড়ি বাঘারপাড়ার বোয়ালিয়া গ্রামে বেড়াতে যান। আমাদের জানান সুস্থ হয়ে এসে জমি লিখে দিবেন। উক্ত জমি আমরা দীর্ঘদিন ভোগ দখল করতেছি । গতকাল নড়াইলের সালাম এসে বলেন এই জমি আমি ক্রয় করেছি। তখন আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমার জেঠাতো ভাই খোকন মল্লিক উধাও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রদ্যুৎ রায় বলেন, আমি সহ এলাকার বেশিরভাগ লোক জানেন অনুপ মল্লিকের কাছ থেকে খোকন মল্লিক ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছেন জমি বিক্রি করার জন্য। এখন সেই জমি অন্য কেউ এসে দাবি করলে এটা মেনে নেওয়া যায়না। আমরা চাই গ্রামে শানিন্ত রক্ষায় অনুপকে জমি দেওয়া হোক।
ইউপি সদস্য নীলকান্ত মহন্ত বলেন খোকন মল্লিক ও অনুপ মল্লিক ভাই ভাই হওয়ায় জমির বায়না লিখিত হয়নি। তবে আমরা সবাই জানি খোকন মল্লিক তার ভাই অনুপ মল্লিকের কাছ থেকে জমি বিক্রি বাবদ বাবদ ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। আর এখন যদি অন্য জাতির লোক এসে এই জমির মালিকানা দাবি করে তবে তাকে খোকন মল্লিককে নিয়ে এসে জমি বুঝে নিতে হবে।
এ বিষয়ে সালাম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন খোকন মল্লিককে গুম করি নাই। কোথায় আছে তা আমি জানিনা। খোকন মল্লিক আমাকে জমি লিখে দিয়েছেন গত ৩১.১২.২০২২ ইং তারিখে। সাক্ষী হিসেবে সাতঘরিয়া গ্রামের সঞ্জিদ বাগচী ও বোযয়ালিয়া গ্রামের লোকজন ছিল।
সালামের দলিলে স্বাক্ষরকৃত সাতঘরিয়া গ্রামের সঞ্জীদ বাগচি বলেন, আমাকে ডেকে নিয়ে গেছিল তাই আমি সই করেছি । খোকন মল্লিক সালামকে জমি লিখে দিয়ে সম্ভবত ভারতে চলে গেছে। এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শওকত কোবির বলেন আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। যদি লিখিত অভিযোগ করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।