গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে ৭২২ দিন বন্ধ থাকার পর সারা দেশের মতো ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পুরোদমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে, বাচ্চারা বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধূলায় মেতে উঠেছে। করোনার সংক্রমণ কমায় বিদ্যালয় খুলে যাওয়ায় খুশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এতোদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তাদের ঘরবন্দি অবস্থায় ভালো লাগছিলো না, এখন বিদ্যালয় খুলে দেয়ায় তাদের খুব আনন্দ হচ্ছে। অনলাইনে ক্লাস করলেও মফস্বল এলাকার শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। গুটিকয়েক শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করলেও শ্রেণিকক্ষকে মিস করেছেন। তেমনিভাবে শিক্ষরাও বলছেন, মিস করেছেন শিক্ষার্থীদের।
শেখ লেবু স্মৃতি পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া মাম্মি বলেন, সহপাঠীদের সঙ্গে গল্প, আড্ডা আর মনখুলে কথা বলতে পারিনি। শিক্ষকদের কাছে পাইনি। অনলাইনে ক্লাস করলেও সরাসরি ক্লাস করার আনন্দটাই অন্য রকম। শিক্ষকদের খুব মিস করেছি। আমরা খুব আনন্দিত।
পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক শংকর ঘোষ পিলু জানান, বিদ্যালয় খুলে দেয়ায় আমরা আনন্দিত। বাচ্চারা এতোদিন বাসায় তেমন পড়াশুনা করেনি, তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন শিক্ষকরা আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করালে সেই ক্ষতি পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করি।
বিদ্যালয় খুলার ২য় দিনে গৌরীপুরে পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম মাজহারুল আনোয়ার ফেরদৌস এর কাছে কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি এ ঢাকা প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যালয় পুরোপুরিভাবে খুলে দেয়ায় আমরা আনন্দিত। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের ১২ তারিখ স্কুল খুললেও শ্রেণিভিত্তিক সপ্তাহে দু’দিন করে ক্লাস হতো কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এ বছরের জানুয়ারী মাসে আবার বন্ধ হয়ে যায়। এখন আগের মতো পুরোপুরি ক্লাস হচ্ছে। প্রায় ২ বছর পর শ্রেণিকক্ষে আসতে পারিনি তাই মনটা খারাপ।
জাগরণী পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শঙ্কর চন্দ্র চাকী প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যালয়ের সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করানো হচ্ছে। তবে শতভাগ উপস্থিতি এখনো নিশ্চিত করা হচ্ছে না।
শেখ লেবু স্মৃতি পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আম্বিয়া আক্তার জানান, সরকারিভাবে বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ব্লিচিং পাউডার, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক প্রদান করেছে। জাগরণী পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, সরকারের নির্দেশনা মেনে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হওয়াতে আমরাও উচ্ছ্বসিত।