স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে যেমন হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনি গরিব রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কবে হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসন।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি চাহিদা গ্যাস, ডায়াবেটিস ও প্রেসারের ওষুধ। এর কোনো ওষুধ হাসপাতালে নেই। এ ছাড়া ঠান্ডা এলার্জির জন্য হিসটাসিন ও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ এজিথ্রোমাইসিন সবচেয়ে বেশি চলে, এগুলোও নেই। গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী হাসপাতালে সরবরাহ নেই।
গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে রিএজেন্ট (প্যাথলজি পরীক্ষা করার কিট) নেই। তাই সব প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
নার্সরা বলছিলেন, হাসপাতাল চালাতে গেলে ক্যানুলা, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ও স্যালাইন সেট অতি প্রয়োজনীয়। অথচ তিন-চার মাস ধরে এগুলোর সরবরাহ নেই।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা আগে অধিকাংশ ওষুধই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করতে পারতাম। এতে রোগীরা সন্তষ্ট ছিলেন। কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ৯০ ভাগ ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী নেই। তাই চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে নানা সমস্যা হচ্ছে।’
আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে। এরপরই ঠিকাদারেরা ওষুধ কিনতে পারেন। সেই অনুমোদন না পাওয়ায় ঠিকাদারেরা ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে পারেননি। এ জন্য এই সংকট তৈরি হয়েছে।
নড়াইলের সিভিল সার্জন নাছিমা আকতার বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না হওয়ায় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী ঠিকাদারের কিনতে পারেনি। কবে অনুমোদন হবে তা নিশ্চিত বলতে পারছি না। তবে গত সোমবার এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানির কিছু ওষুধ হাসপাতালে এসেছে।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ৫০-৭০ জন রোগী ওই হাসপাতালে ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগে তিন শ থেকে পাঁচ শ রোগী প্রতিদিন ভিড় জমায়। হাসপাতালে আসা এসব রোগী অধিকাংশই গরিব পরিবারের। তাদের পক্ষে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী কেনা সম্ভব নয়। এতে রোগীরা বিপাকে পড়েছে।
দেখা গেছে, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমে সমস্যায় পড়ছেন। লোহাগড়ার রঘুনাথপুর গ্রামের টুটুল শেখের ৮ বছরের ছেলে তামিমকে পেটেব্যাথা ও ডায়রিয়ার জন্য এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টুটুল শেখ বলছিলেন, ‘আমি গরিব মানুষ বলে হাসপাতালে এসেছি। কাছে ছিল মাত্র ৫০০ টাকা। আমার ওষুধ, স্যালাইন ও স্যালাইনসেটসহ সবকিছু কিনতে হচ্ছে। দোকানে বাকি রেখেছি। রাজুপুর গ্রামের নজরুল ইসরাম জানান, সে মাথা ব্যথা ও জ¦র জ্বর ভাবের জন্য লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেলে তাকে কিনে খাওয়ার জন্য কিছু ঔষধ লিখে দিয়েছে । এভাবে অনেকেই অভিযোগ করেন।