স্টাফ রিপোর্টার
সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা দেয়ার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিছালী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি এবং ওই কলেজের শিক্ষক আকতার হোসেন টিংকুকে আ’লীগ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্ত্তী এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামি তিনদিনের মধ্যে লিখিত জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ভিডিওফুটেজে দেখা যায় আপনি ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আপনি আওয়ামী লীগের একজন নেতা হওয়া সত্ত্বেও আপনার উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয়। এছাড়া বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবরে আপনি এ ঘটনার সাথে জড়িত এ অভিযোগ করে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। এসব কারণে আপনি এ দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। আমরা মনে করি আপনি, সভাপতি হিসেবে যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
গত ২৭জুন জেলা প্রাশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত কয়েক বক্তা মির্জাপুর কলেজে সহিংসতা চলাকালীন সময়ে মির্জাপুর কলেজের শিক্ষক আক্তার হোসেন কিংকু নিজে অধ্যক্ষ হওয়ার মানসে ছাত্র ও জনতাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লোগান ও উষ্কে দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
এদিকে মির্জাপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে এ হেনস্থার কারণ কি এমন এক প্রশ্নে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘সরাসরি বলতে পারবো না, তবে আমার ধারণা এই পদে অন্য কারো ইচ্ছা থাকতে পারে । কারণ গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ব্যানার কলেজে টানানো হলেও পরদিন সে ব্যানার চুরি হয়ে যায়। আমার মনে হয় আমাকে হেয় করতে এটা করা হয়েছিল। এটাই একটি বড়ো প্রমান’।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আকতার হোসেন কিংকু বলেন, ঘটনা শুরুর সময় আমি ক্লাসে ছিলাম। অধ্যক্ষ আমাকে ডাকলে সেখানে যাই এবং সমস্ত সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করেছি। এখানে অধ্যক্ষ হওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। উদ্দেশ্যমূলক আমাকে দায়ী করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় ফেসবুকে মহানবী (সাঃ)কে নিয়ে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ায় গত ১৮জুন কলেজে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং অভিযুক্ত ছাত্র ও কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে পুরিশের সামনে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। পরে অভিযুক্ত রাহুলকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের মামলায় গ্রেফতারকৃত ৪জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৫দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আগামি ৩জুলাই রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।