স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার কলেজছাত্র আকাশ সাহার ফেসবুকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে সহিংসতায় ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর, দোকান ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা সেই রামুর ঘটনা থেকে দেখি, নাসিরনগর ঘটনা থেকেও দেখি; সকল ঘটনার সাথে একটি যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এসব ঘটনা পরিকল্পিত। এ ঘটনার উদ্দ্যেশ্য একটাই-আমাদের সমাজে সাম্প্রদায়িক বীজ বপন করা, সরকারকে বিব্রত করা। দেশের জনগণকে অস্থিতিশীল করা। এখানে (নড়াইলের দিঘলিয়া) যে ঘটনা ঘটেছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্বস্ত করেছি, মাননী প্রধানমন্ত্রী ঘটনা শোনার পরই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা চাই এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের খুঁজে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য অপরাধীদের এমন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-সংসদ সদস্য মাশরফী বিন মোর্ত্তজা, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান, লোহাগড়া পৌর মেয়র সৈয়দ মসিয়ূর রহমান, দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিনসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এরপর দুপুরে নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মাহবুব উল আলম হানিফ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার কলেজছাত্র আকাশ সাহার ফেসবুকে মহানবীকে (সাঃ) নিয়ে কটূক্তির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি ওইদিন জুম্মার নামাজের পর বিভিন্ন পেশার মানুষের নজরে আসে। এরপর বিক্ষুদ্ধ লোকজন আকাশ সাহার গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে তাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। ওইদিন বিকেল থেকে উত্তেজনা আরো বাড়তে থাকে।
বিক্ষুদ্ধ লোকজন একপর্যায়ে সাহাপাড়ার পাঁচটি বাড়ি ও দিঘলিয়া বাজারের ছয়টি দোকান ভাংচুর করেন। এর মধ্যে গোবিন্দা সাহার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে দুই রুম বিশিষ্ট টিনের ঘরটি পুড়ে গেছে। এছাড়া সাহাপাড়ার মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ডবক্স এবং আখড়াবাড়ি মন্দিরের টিনের চালা ভাংচুর ও মহাশ্মশান কালিবাড়ি মন্দির সামান্য ক্ষতি করে বিক্ষুদ্ধরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে।