স্টাফ রিপোর্টার
অবশেষে দীর্ঘ ৩৬দিন পর নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ খুলেছে। তবে কলেজে যাননি অধ্যক্ষ। এমনকি কোনো শিক্ষার্থীও হাজির হয়নি। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৫-৬জন শিক্ষক গেলেও পরে ১০-১২জন শিক্ষক উপস্থিত হন। এদিকে ৩শিক্ষকের মোটরসাইকেল পোড়ানোর ঘটনায় রিপন নামে আরও এক কলেজ ছাত্রকে পুলিশ গেস্খফতার করেছে। এছাড়া গেস্খফতারকৃত অপর ছাত্র রায়হানের বিরুদ্ধে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর অধ্যক্ষ আজও বাড়িতে ফেরেননি।
কলেজ খোলার প্রথম দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী সকাল ১০টার আগে মির্জাপুর কলেজে পৌছান। এ সময় তার সাথে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাজেদুল ইসলাম এবং স্থানীয় মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাইফুল। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, দীর্ঘ বন্ধের পর আজ কলেজ খুলেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে ছাত্র-ছাত্রীদের ফোনে খবর দিতে বলা হয়েছে। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা কলেজে আসবে। প্রথমে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। পরে পর্যায়ক্রমে একাদশ ও ডিগ্রি পর্যায়ের ক্লাস শুরু হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, রোববার দুপুর ১২টার দিকে আমরা খবর পাই আজ কলেজ খুলছে এবং কলেজে যেতে হবে। তারপর আমরা কলেজে আসি।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস কলেজের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বড়কুলায় নিজ বাড়িতে ফেরেননি। নড়াইল শহর অথবা শহরতলিতে কোনো আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যক্ষের বাড়িতে তাঁর মা বনলতা বিশ্বাস-বাবা সুমন্ত বিশ্বাস, স্ত্রী ও স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ৩ কন্যা।
অধ্যক্ষ হেনস্থা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মো. মাহামুদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মির্জাপুর গ্রামের আফজাল শেখের পূত্র মির্জাপুর কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রিপন শেখ রিপু শনিবার (২৩জুলাই) রাতে পাশর্^বর্তী সিঙ্গাড়ি বাজার থেকে গেস্খফতার হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে শিক্ষকদের মোটরসাইকেল পোড়ানোর সাথে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার বয়স সাড়ে ১৬ বছর হওয়ায় তার রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। এছাড়া গেস্খফতার হওয়া মির্জাপুর কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রায়হানের বিরুদ্ধে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত এ রিমান্ড কার্যকর হবে। রোববার (২৪জুলাই) সদর আমলি আদালতে রিমান্ড শুনানী শেষে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদা এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ পর্যন্ত ৮জন গেস্খফতার হয়েছে। আসামিরা সবাই হাজতে।
মির্জাপুর কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আ্যাডঃ অচিন চক্রবর্ত্তী বলেছেন,গত শনিবার রাত ৯টার পরে কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হটাৎ করে সিদ্ধান্ত হওয়ায় সবাই হয়তো সময়মতো জানতে পারেননি। অধ্যক্ষ কয়েক দিন কয়েকদিন ছুটিতে থাকবেন এবং তারপর কলেজে যাবেন বলে জানান।
গত ১৮ জুন ফেসবুকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে অবমাননার ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরিয়ে জনতা ও পুলিশের সামনে লাঞ্চিত করা হয়। এ ঘটনার পর কলেজ বন্ধ হয়ে যায়।