নড়াইলে তিন পুরুষই মানুষ গড়ার কারিগর

0
59
নড়াইলে তিন পুরুষই মানুষ গড়ার কারিগর
নড়াইলে তিন পুরুষই মানুষ গড়ার কারিগর

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের কালিয়ায় বাবা-দাদা শিক্ষকতা করেই কাটিয়েছেন। তাদের হাতে গড়া ছাত্ররা যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। বাবা-দাদার পেশাকেই বেছে নিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন জাতীয় শিক্ষা পদক প্রাপ্ত উপজেলার পশ্চিম কলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম জগলুল হায়দার। এ নিয়ে তাঁর পরিবারের তিন পুরুষই নিজেদেরকে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রেখেছেন। জগলুল হায়দার উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক এস এম ইমাদ উদ্দিনের ছেলে। চলতি বছর তিনি জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় কালিয়া উপজেলা ও নড়াইল জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ তাঁকে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন। বর্তমানে জগলুল হায়দার বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জানা যায়, জগলুল হায়দারের দাদা বদর উদ্দিন মাষ্টার বৃটিশ আমলে নিজের উদ্যোগে বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলে ছিলেন একটি পাঠশালা। তার পরিচালিত পাঠশালা থেকে এলাকার বহু ছেলে মেয়েকে তিনি শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছিলেন। শিক্ষার আলো ছড়ানোর কারণে এলাকায় তিনি ওস্তাদজি হিসাবে পরিচিতি রয়েছে। পরবর্তীতে কালে ওস্তাদজির একমাত্র ছেলে এস এম ইমাদ উদ্দিন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশা নিয়ে সারা জীবন জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন। শুধু তাই নয় ইমাদ উদ্দিনের দুই ছেলে এস এস জুলফিকার ইমরান ও এস এম জগলুল হায়দার বাবা-দাদার পেশাকে আকড়ে ধরেছেন। এদের মধ্যে জগলুল হায়দার পৈত্রিক পেশায় বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন। পেশাগত কাজে সাফল্যের কারণে তিনি একাধিক পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন।

২০০৩ সালে তিনি উপজেলার দুলালগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়েই তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু হয় । নিজের কর্মদক্ষতার গুনে অতি অল্প সময়ের মধ্যে ২০০৬ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে যোগানিয়া খান সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি পেয়ে পেশার প্রতি তিনি বেশী যতœবান হয়ে ওঠেন। ২০০৭ সালে তিনি বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেন। এরপর তিনি তার কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয় থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে বিশেষ ভুমিকাসহ শতভাগ সফলতা অর্জন করায় ২০১৩ সালে নড়াইল জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। চলতি বছর তিনি জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় কালিয়া উপজেলা ও নড়াইল জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ তাঁকে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় উপজেলা ও জেলায় বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।

উপজেলার পশ্চিম কলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুরস্কার প্রাপ্তি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘শিক্ষা জীবন শেষে বাবা-দাদা ও বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণাকে সামনে রেখে পেশা হিসেবে শিক্ষকতাকেই বেছে নেই। অপরদিকে পেশায় মনোযোগী হয়ে ওঠি। সরকারি নির্দেশনার পাশাপাশি নিজের চিন্তা চেতনাকে কাজে লাগিয়ে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হই। একাধিক পুরস্কার প্রাপ্তির কারণে আমি পেশার প্রতি বেশী মনোযোগী হয়ে উঠেছি। বর্তমানে বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।