স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল সদর হাসপাতালের নার্স বিউটি পারভীন ও সহকারী পরিচালক মো. আসাদ-উজ-জামান মুন্সিকে রোগীর স্বজনেরা মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ১৩ অক্টোবর বৃসহপতিবার দুপুরে হাসপাতালের সম্মেলন কেন্দ্রে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রেমানন্দ মন্ডলের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত মঙ্গলবার দুুপুরে হাসপাতালে কি ঘটেছিল ভুক্তভোগী নার্চ ও সহকারী পরিচালক সংবাদ সম্মেলনে তার ঘটনার বর্ণনা দেন।
উপপরিচালক ডাক্তার মো. আসাদ-উজ-জামান মুন্সি বলেন, নার্সের চিৎকারে আমি ঘটনা স্থালে এসে বিষয়টা জানার চিষ্টা করি এ সময় সুমাইয়ার স্বামী ইমরান আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন । এ সময় হাসপাতালে আগত লোকজন এসে ইমরানকে থামান।
নার্স বিউটি পারভীন বলেন, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের সুমাইয়া (১৯) গাইনি বিভাগে ভর্তি ছিলেন। মঙ্গলবার দুুপুরের দিকে তাঁর হাসপাতালের লেবার রুমে গিয়ে আমার সঙ্গে সুমাইয়ার স্বামী ইমরান তর্কে জড়ান। এ সময় আমি লোকদিয়ে একটি রুমের ফ্যান মেরামতের কাজ করছিলাম। এক পর্যায়ে সুমাইয়ার স্বামী ইমরান শেখ আমাকে গালাগাল করেন এবং পেটে লাথি মারেন এ সময় আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। তখন ইমরানের মা রিমা তাঁর কাপড়চোপড় ধরে টানা-হেঁচড়া করেন। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি।
চিকিৎসারত অবস্থায় অভিযুক্ত সুমাইয়া বলেন, আমার প্রচন্ড পেটে ব্যাথা শুরু হলে স্বামী নার্সকে খুজতে গেলে দেখেন নার্স ফ্যান মেরামত করছে। তখন আমার স্বামী নার্সকে আসতে বললে তিনি বলেন, দেখছ না কাজ করছি। তখন আমার স্বামী বলেন আপনার কি ফ্যান মেরামত করা কাজ। কথা শুনে নার্স রেগে গিয়ে পায়ের জুতা খুলে আমার স্বামীকে মারপিট করেন। একপর্যায়ে হাসপাতালের সকলে একত্রিত হয়ে আমার সাথে আসা স্বজনদের উপর হামলা করে লোহার রড দিয়ে মেরে সুমাইয়ার শাশুড়ি রিমির কানে আঘাত করে এবং কান কেটে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ এসে আহত রিমিকে থানায় নিয়ে যান।
নড়াইলে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা.প্রেমানন্দ মন্ডল। বৃহম্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় সদর হাসপাতালের হলরুমে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক করেন তিনি। এ সময় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন,‘সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচারণ এবং তথ্য প্রদানে অনীহার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করছি। পরবর্তীতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকা হবে।’ বৈঠকে আলোচনার পর সম্মানজনক সমঝোতা হয়েছে।
সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা.আসাদ উজ-জামান, ডাক্তারনার্স, স্টাফ ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ১০ অক্টোবর দুপরে নড়াইল সদরহাসপাতালে লোহাগড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের সুমাইয়া বেগম নামে এক নারী চিকিৎসা নিতে আসে । পরের দিন ১১ অক্টোবর দুপুরে পেটেব্যাথা জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসা ওই রোগী ও তার স্বজনদের মারধর করার অভিযোগ উঠে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের বিরুদ্ধে। পরেরদিন বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরের দিকে রোগী ও তার স্বজনদের মারধর করার অভিযোগের সত্যতা জানতে এ ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা বক্তব্য নিতে গেলে তাদের সঙ্গে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.প্রেমানন্দ মন্ডল অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে তত্ত্বাবধায়কের অসৌজন্যমূলক আচারণ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।