স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে প্রশিকার ৫ কোটির টাকার সম্পত্তি দখল করতে প্রশিকার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপককে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে এ অভিযোগ করেছেন প্রশিকার কর্মকর্তাবৃন্দ। তারা প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ থাকা নড়াইলে প্রশিকার আঞ্চলিক অফিসের কার্যক্রম নির্বিগ্নে চালু করতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ও সরকারি দলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
নড়াইলে প্রশিকার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শেখ রবিউল ইসলামকে হত্যা চেষ্টার দু’দিন পর শনিবার (১এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা থেকে প্রশিকা প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র পরিচালক শেখ সাহিদ হোসেন, উপ পরিচালক মোঃ গোলাম রব্বনী, কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক রাশিদা বেগম, প্রশিকার আইন উপদেষ্টা অ্যাডঃ শাহাবুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম নড়াইলে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তারা বলেন, আমরা শুনেছি প্রশিকা থেকে বহিস্কৃত সাবেক চেয়ারম্যান ড. কাজী ফারুক আহম্মদের প্রতিনিধি প্রশিকার সাবেক কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার বখতিয়ার মোল্যা ও আশিকুল বিশ্বাসের কাছে ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের দিকে প্রশিকা নড়াইলের আঞ্চলিক অফিসের ৪৫ শতাংশ জমি, দেড় শতাধিক গাছপালা ও অবকাঠামো তাদের কাছে অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে বিক্রির জন্য ষ্টাম্পের মাধ্যমে বিক্রির বায়না করে। কিন্ত প্রশিকা কোনো ব্যক্তির নয় এটি একটি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি। এ জমি বিক্রি করার কারও কোনো অধিকার নেই। এ সম্প্রতি রক্ষার জন্য এবং অফিসটি পূনরায় চালু করতে ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম চেষ্টা করছিলেন। তখনই তার ওপর এ হামলা চালানো হলো। তারা এ ঘটনায় দোষিদের বিচার দাবি করেছেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালের মার্চের দিকে বখতিয়ার ও আশিকুলের লোকজন তৎকালীন প্রশিকা কর্মকর্তাদের অফিস ছেড়ে দিতে বলে এবং ভয়ভীতি দেখায়। এ কারণে ওই বছরের মার্চে নড়াইলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে দেওয়ানি আদালতে জায়গার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর থেকে প্রায় রাতে অফিস ভবনের টিনের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এছাড়া তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা অফিসের সামনে এসে চেয়ার পেতে বসে থাকতো। এ কারণে কর্মকর্তারা এপ্রিল থেকে এ অফিস তালাবদ্ধ করে পার্শ্ববর্তী মাইজপাড়া এলাকায় গিয়ে তাদের কার্যক্রম চালু রাখে।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে রবিউল ইসলাম মাইজপাড়া থেকে অফিস সেরে নড়াইলে আসার পথে ঘোড়াখালি এলাকায় ভূমি দস্যুদের কয়েক ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ব্যবস্থাপককে হত্যা করতে জখম করে। এ সময় এলাকাবাসী শহরের ভওয়াখালী এলাকার পারভেজ হাসানকে চাকুসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ওই রাতেই পুলিশ এ ঘটনার জড়িত অপর আসামি দিঘলিয়া এলাকার রমজান শেখকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে প্রশিকা কর্মকর্তা এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। এ ঘটনায় ব্যবস্থাপকের মা রোকেয়া বেগম বাদি হয়ে নড়াইল সদর থানায় ৭জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে এ ঘটনার অভিযুক্ত ৪ নম্বর আসামি বখতিয়ার মোল্যা ও ৫ নম্বর আসামি আশিকুল বিশ্বাসকে এ বিষয়ে তাদের ব্যবহৃত ফোন নম্বরে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সদর থানার ওসি মোঃ ওবাইদুর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃত দু’জন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে শুক্রবার সন্ধ্যায় নড়াইলের আমলি আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।