আবদুস ছালাম খান
পদ্মা সেতু ও কালনা সেতু চালু হওয়ার পর লোহাগড়া উপজেলার কালনাসেতু থেকে নড়াইল-যশোর হয়ে বেনাপোল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বাড়তি যানবাহনের চাপ সামলাতে আপাততঃ কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত বর্তমান মহাসড়কটি আরো ছয় ফুট প্রশস্ত করার কাজ চলমান রয়েছে।
প্রশস্তকরণের কাজ শুরু করার আগে সড়কের পাশের গাছ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও এখনও সড়কের অতি নিকটে এবং সড়কের উপর ঝুঁকে পড়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ গাছ রেখেই সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কের পাকা অংশের এক ফুটেরও কম দুরত্বে থাকা এই গাছগুলির কোন কোনটি সড়কের উপর হেলে পড়েছে। আবার কোন কোনটি সড়কের পাকা অংশের সাথে মিশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে দ্রুতগামী কোন যানবাহন সাইড দিয়ে যেতে গেলে গাছের সাথে লেগে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাছাড়া প্রশস্তকরণের কাজ শেষ হওয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ এই গাছগুলি অপসারণ করতে গেলে সদ্য নির্মিত সড়কটি মারাতœক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন কর্মচারী জানান – ‘শুনেছি সড়কের পাশে থাকা অবশিষ্ট গাছগুলি জেলা পরিষদের। অপরদিকে কেটে নেয়া গাছগুলি নড়াইল বনবিভাগ সামাজিক বনায়ণ কর্মূসূচীর আওতায় সৃজন করেছিল। সড়ক প্রশস্তকরণের আগেই তারা সড়ক বিভাগের নির্দেশমত যথারীতি কেটে নিয়ে গেছে। উল্লেখ্য এই মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তরের আগে জেলা পরিষদের রাস্তা ছিল। সামাজিক বনায়ণের আগে মহাসড়কের পাশে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ওই গাছগুলি বর্তমানে মূল্যবান গাছে পরিণত হয়েছে। তাই পুরাতন গাছগুলিতে তাদের দাবী রয়েছে।
এদিকে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা থাকলেও কবে নাগাদ বাস্তবায়ন হবে তার নিশ্চয়তা নেই। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ১৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য কয়েক বছর আগে ১১ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। প্রকল্প অনুসারে মহাসড়কের নকশার কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু অর্থায়নের অভাবে এ প্রকল্প কবে নাগাদ শুরু হবে দায়িত্বশীল কেউ তা জানাতে পারেনি । তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থায়নের জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। অর্থের সংস্থান হলে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এদিকে মহাসড়কটিকে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমির মৌজাভিত্তিক দর ও ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় এবং অবকাঠামো, গাছপালা ইত্যাদির ক্ষতিপূরণ ব্যয় প্রাক্কলন করে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তখন নড়াইল অংশে ৩২টি মৌজায় ২৭৪ একর জমির সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর পরে এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি নেই।
স ও জ নড়াইলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তোফায়েল আলম জানান,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল সড়কে গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বাড়তি যানবাহনের চাপ সামলাতে আপাততঃ কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত বর্তমান সড়কটি আরো ছয় ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। মহাসড়কের পাশের গাছগুলির অধিকাংশই কেটে ফেলা হয়েছে। অবশিষ্ট গাছগুলিতে জেলা পরিষদের দাবী রয়েছে। মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হলেই গাছগুলি কেটে ফেলা হবে।