স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে গাছে পেরেক ঢুকিয়ে হরহামেশাই চলছে বিভিন্ন পণ্য, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিজ্ঞাপন বা প্রচার-প্রচারণা। সড়কের পাশে বেড়ে ওঠা গাছগুলো মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু হলেও এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারের অবলম্বন হয়েছে জেলার প্রতিটি হাট-বাজারসহ সড়কের পাশের দৃষ্টিনন্দন গাছগুলো। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনেও একেকটি গাছে টানানো হয়েছে নানারকম প্রচারণামূলক সাইনবোর্ড। এসব প্রচারের জন্য ক্ষতি হচ্ছে গাছগুলোর এবং হুমকির মুখে পড়ছে প্রাণ ও প্রকৃতি।
মহাসড়কের পাশে গাছগুলোর দিকে তাকালে খুঁজে পাওয়া যায় বিভিন্ন ব্যক্তির প্রচারমূলক ব্যানার, ফেস্টুন, কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট স্কুলে ছাত্রভর্তি, চিকিৎসা সেবা, হারবাল ওষুধ বিক্রি, টু-লেটসহ নানা ধরণের প্রচার-প্রচারণা। গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হয় হরেক রকমের চটকদার বিজ্ঞাপন। গাছগুলো যেন একেকটা জীবন্ত বিজ্ঞাপন বোর্ড।
২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাস হলেও যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার ফলে ক্রমশই বাড়ছে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন বোর্ড লাগানো। নড়াইল জেলা জুড়ে বিভিন্ন সড়কগুলোতে গাছের মধ্যে লাগানো বিজ্ঞাপন বোর্ডে সয়লাব। শুধু গাছ নয়, বিজ্ঞাপনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরও। এতে করে পরিবেশের সৌন্দর্য্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সরেজমিনে বেশ কিছু স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন গাছে পেরেক ঢুকিয়ে টাঙানো হয়েছে পোস্টার- ফেস্টুন। বোঝার উপায় নেই গাছ নাকি বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড। লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের মিঠাপুর বাজারে রকিবুলের দোকানের সামনে বটগাছটি বিজ্ঞাপনের ব্যানার,ফেস্টুনে প্রায় ঢেকে ফেলা হয়েছে।
একই চিত্র কালিয়া উপজেলাতেও গাছে গাছে পেরেক দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞাপনের ব্যানার।
কলেজছাত্র নাসির গাজী বলেন, নির্বিচারে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে অসংখ্য ছিদ্র হচ্ছে। সেই ছিদ্র দিয়ে পানি ও বাতাস ঢোকে গাছে পচন ধরে। বহু গাছ মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা সকলেই সচেতন হয়ে একটি সুন্দর পরিবেশ রক্ষায় জাগ্রত হয়ে, গাছকে বাঁচতে দিবো।
সাব্বির জমাদ্দার নামে একজন বলেন,গাছ সবকিছু বিলিয়ে মানুষের উপকার করছে, পেরেক বিদ্ধ করে গাছকে আহত করা ঠিক না। যারা গাছে পেরেক লাগাতে বলে তাদের সবাইকেই সচেতন হতে হবে। গাছকে রক্ষায় আমাদের ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি জরুরি।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, রাস্তার পাশে মালিকানা এবং জেলা পরিষদের গাছ রয়েছে। যেহেতু গাছে পেরেক ঢুকিয়ে বিজ্ঞাপন বোর্ড লাগিয়ে গাছের ক্ষতি করা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।